জেলা প্রতিনিধিঃ
শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেবে সরকার এমন গুজবে কান দিয়ে নিবন্ধন করার জন্য গাইবান্ধায় বিভিন্ন কম্পিউটার দোকানে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণে মহাব্যস্ত হয়ে পড়েছে । একই চিত্র দেখা যায় প্রায় জেলার প্রত্যেকটি উপজেলাসহ ইউনিয়নের সকল হাট-বাজারের কম্পিউটারের দোকানে।
এই বিষয়ে কেউ অন্যের মুখে শুনে, কেউবা ফেসবুকে বন্ধুদের কাছে শুনেছেন সরকারি দশ হাজার টাকা অনুদানের কথা। এরপর স্কুলের স্যারদের কাছে গেলে তারা কিছু বলতে পারেননি বলে জানান অনেকে। অথচ প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়নসহ বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে নিবন্ধনের জন্য অভিভাবকরাসহ কম্পিউটারের দোকানে শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখা যায়।
শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে তারা কেউ বলেন, ১০ হাজার টাকা করে করোনা ভাতা দেয়া হবে সেজন্য রেজিস্ট্রেশন করছি। আবার কেউ বলেন, উপবৃত্তির জন্য নিবন্ধন করতে এসেছি আবার কেউ জানায় সরকারি সহায়তার জন্য আবেদন করছি।
জানা যায়, করোনা মহামারিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর-মাউশি’র আওতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অনুদান প্রদানের বিজ্ঞপ্তিতে টাকার পরিমাণ উল্লেখ নেই। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয় সবাইকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে।
সেই গুজবের রেশ ধরে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকায় দিনভর এমনকি রাতেও নিবন্ধনের জন্য কম্পিউটারের দোকান গুলোতে ভিড় করে হাজার হাজার ছেলে মেয়ে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মাউশি গত ১৮ জানুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তিতে অনুদানের জন্য মাউশির ওয়েবসাইটে আবেদন ফরমে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে সবার জন্য সরকারি অনুদান দেওয়ার কথা বলা নেই। বলা আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র ক্রয়সহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজের জন্য, শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের দুরারোগ্য ব্যাধি ও দৈব দুর্ঘটনার সহায়তার জন্য এবং শিক্ষার্থী যারা দুরারোগ্য ব্যাধি, দৈব দুর্ঘটনা এবং শিক্ষাগ্রহণ কাজে ব্যয়ের জন্য আবেদন করতে পারবে।
তবে শিক্ষার্থীদের এ বিশেষ অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে দুঃস্থ, প্রতিবন্ধী, অসহায়, রোগাক্রান্ত, গরিব, মেধাবী, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এই অনুদানের আবেদনের সময়সীমা ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মাউশি সেই আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়েছে (৭ মার্চ) পর্যন্ত। এ বিষয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি সময়সীমা বাড়ানোর একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।
এদিকে মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে অনুদানের টাকার পরিমাণ উল্লেখ না থাকলেও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাউশি থেকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ছড়িয়ে পড়েছে। এই অনুদানের টাকা পাওয়ার জন্য করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ থাকা গাইবান্ধার প্রায় সকল স্কুল-কলেজ গুলোতে প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার জন্য ভিড় করে হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
দিনভর এমনকি রাতেও দেখা গেছে কম্পিউটারে টাইপ করা প্রত্যয়নপত্রের ফরম পুরণে ব্যস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা।