আজ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আর্শ্বিনে রাঁধে, কার্তিকে খায় পার্বন
মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াছঃ
“আশ্বিনে রাঁধে, কার্তিকে খায়/যেই বর মাগে, সেই বর পায়।” সনাতন সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই প্রবচন।
আশ্বিন সংক্রান্তির রাঁতে সারারাঁত জেগে বিশেষ খাবার তৈরি করেন সনাতন ধর্মের বাড়ির রমনীরা। এর মধ্যে অন্যতম গুড়মিশ্রিত নারিকেল। কার্তিকের সকালে সেই নারিকেল ও বাংলা কলা দিয়ে পূজায় নিবেদন করা পান্তা ভাত খাওয়া হয়।
কার্তিক একসময় ছিল অভাবের মাস। সেই মাসের প্রথম দিনের সকালে সন্তানকে ভালোমন্দ খাইয়ে মায়েরা আশা করতেন “পুরো বছরটা ভালো যাবে, সন্তান থাকবে দুধে ভাতে।”
আশ্বিন মাসের শেষদিন ও কার্তিক মাসের প্রথম দিনকে ঘিরে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রচলিত আছে এমন এক পার্বনের নাম “জলবিষুব সংক্রান্তি।”
সারা দেশের ন্যায় আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) এই পার্বন উপলক্ষে খাগড়াছড়িতেও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা করছেন অশ্বিনী কুমারের ব্রত। এই ব্রত “ব্রতের ভাতের পূজা” নামেও পরিচিত।
সনাতনী ইতিহাস মতে আরও জানা যায়, স্বর্গের চিকিৎসক অশ্বিনী কুমারদ্বয় সূর্যদেব ও সংজ্ঞার পুত্র। অভিশাপগ্রস্ত সংজ্ঞা জগজ্জননী পার্বতীর কাছে নিজের দুর্দশা থেকে মুক্তি চাইলে পার্বতী এক মুষ্টি চাল দিয়ে তাকে বলেছিলেন, আশ্বিন মাসের শেষ তারিখ পূর্বরাত্রে শেষ দিবস রেখে এই চাল ভক্তিপূর্বক রন্ধন শেষে মহাদেবের অর্চনা করতে হবে এবং কার্তিক মাসের ১ম দিবসে সেই অন্ন ভক্ষণে মনস্কামনা পূর্ণ হবে। সে নিয়ম মেনে রোগ ও অভিশাপমুক্ত হয়েছিলেন দেবী সংজ্ঞা।
ধর্মীয় গুরুর সূত্র মতে জানা যায়, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে উপবাস থেকে অশ্বিনীকুমারের ব্রত পালনের রেওয়াজ দেখা যায়। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার ব্রতের ভাত খাওয়ার ক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে। ভক্তি সহকারে ব্রতের ভাত খাওয়ার ফলে রোগমুক্তি ও মনস্কামনা পূর্ণ হয়।