আবরার হত্যার এক বছর হলো এখনো অধরা তিন আসামি
- আপডেট সময় : ১১:২৭:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০২০
- / ১০৪৫ বার পড়া হয়েছে
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে এক বছর আগে (২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর) বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী পিটিয়ে হত্যা করে। হত্যার পরের দিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এরপর ছাত্রলীগের ২৫ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে ডিবি পুলিশ। ইতোমধ্যে তিনজনকে পলাতক দেখিয়ে আলোচিত মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পলাতক তিন আসামি হলেন- মাহমুদুল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ।
পলাতক তিন আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে দ্রুত মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ করার দাবি জানিয়েছেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। তিনি বলেন, আসামিরা আমার ছেলে আবরার ফাহাদ রাব্বীকে ছয় ঘণ্টা ধরে অমানবিকভাবে শারীরিক নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমার ছেলে হত্যার এক বছর হয়েছে। এখনো পলাতক তিন আসামি। আমি তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যেন তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনেন। আমি এ হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই। মামলাটির বিচার কার্যক্রম যেন দ্রুত শেষ হয় এটা আমার দাবি।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এহসানুল হক সমাজী বলেন, মামলাটির বিচার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি মামলার কার্যক্রম দ্রুত শেষ হবে।
শিশুদের নিরাপত্তা ও সঠিক বিকাশের সুযোগ দিতে হবে: শেখ হাসিনা
আসামিপক্ষের এক আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। আসামিরা দোষী না নির্দোষ তা রায়ে প্রমাণিত হবে।
আবরার হত্যা মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে বিচারাধীন। এই মামলায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ৫ অক্টোবর মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য চলবে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত।মাঝে সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটি বাদ যাবে। প্রথম দিন আবরারের বাবা আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। আসামিপক্ষের জেরা শেষ না হওয়ায় আজ (৬ অক্টোবর) অবশিষ্ট জেরার জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এরপর অন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরদিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
ওই ঘটনায় নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৬০ জনকে।
অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারনামীয় ১৯ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত এজাহারবহির্ভূত ছয়জন রয়েছেন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন। ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।