উজান থেকে ধেয়ে আসছে তিস্তার পানি
রিয়াজুল হক সাগর/রংপুর প্রতিনিধিঃ
ভারতে গজলডোবায় গেট খুলে দেওয়ায় উজান থেকে বাংলাদেশ অভিমুখে ধেয়ে আসছে তিস্তার পানি। এর মধ্যে আবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
অবিরাম বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের মত নেমে আসা উজানের পানিতে এখন টইটুম্বুর দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলো। বিশেষ করে তিস্তা, ঘাঘট, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও করতোয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে বেড়েছে পানি। রংপুরের কাউনিয়ায় উপজেলায় তিস্তা বইছে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।
আজ শনিবার (২৬ আগষ্ট) দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, কুলিখ, টাঙ্গন, পুনর্ভবা নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার আরও ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।রংপুরের গঙ্গাচড়ার নোহালী, কোলকোন্দ, আলমবিদিতর, লক্ষ্মীটারী, মর্নেয়া ও গজঘণ্টা ইউনিয়ন, কাউনিয়ার বালাপাড়া, টেপামধুপুর, পীরগাছার তাম্বুলপুর, ছাওলা ইউনিয়নের তিস্তাবেষ্টিত চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কোথাও কোথাও কোমর পরিমাণ পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর।
লালমনিরহাটের ভোটমারী, তুষভান্ডারের আমিনগঞ্জ, কাকিনা, পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অন্তত ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এতে সদ্য রোপণ করা আমন ধান তলিয়ে গেছে। উপচে গেছে পুকুর। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ২০ হাজার মানুষ। তাদের শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। রংপুর আবহাওয়া কার্যলয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরে ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এ মাসে আরও দু-একদিন বৃষ্টি হতে পারে। রংপুর জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান সাংবাদিককে বলেন, তিস্তায় আবারও ফ্ল্যাস ফ্ল্যাট হয়েছে। প্রয়োজনীয় সবকিছুই মজুত আছে। আমরা প্রস্তুত রয়েছি বন্যা মোকাবিলায়।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, সার্বক্ষণিকভাবে জলমগ্ন ও ভাঙন আক্রান্ত এলাকাসমূহ তদারকি করা হচ্ছে। মাঠপর্যায়ের প্রশাসনকে সতর্ক রাখা হয়েছে। যখন যা প্রয়োজন হবে, তখন তা পৌঁছে দেওয়া হবে। আবহাওয়া অনুযায়ী চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলোর মানুষকে উঁচু স্থান এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।