কালাইয়ে রাস্তার কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ
জয়নাল আবেদীন জয়/জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের কালাইয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অর্থায়নে রাস্তার কাজে নি¤œ মানের ইট বালু ব্যবহারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে । উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের নুনুজ বাজার থেকে ত্রিখোলা রাস্তার কাজে এই অনিয়মের অভিযোগ উঠে।
কালাই এজজিইডি সূত্রে জানাযায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ২.২০ কি.মি রাস্তা রক্ষণাবেক্ষন কাজের অনুকূলে ৮২ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজম বিল্ডার্স কে। গত সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয়েছে ওই রাস্তার কাজ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার দুই পাশে দেওয়া হয়নি মাটি। যে কারনে অনেক জায়গায় ধসে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছে। মানবিহীন ইট ও বালু ব্যবহার করা ছাড়াও রাস্তার দুই পার্শ্বে খাড়া করে দেওয়া ইটগুলো হেলে গেছে। রাস্তায় যে পরিমাণ খোয়া দরকার সে পরিমাণ খোয়া না দিয়ে খাড়া ইটের উপর রোলার তুলে দিয়ে ইটগুলি দাবিয়ে দেওয়া হয়েছে । এতে বসানো খাড়া ইটগুলো ভেঙ্গে ভেঙ্গে যায়। এসব নানা অনিয়মের অভিযোগ করলেও কোন তোয়াক্কা না করে এর মধ্যে দিয়েই ওই কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আজম বিল্ডার্স এর মালিক আজম।
নুনুজ বাজারের শাহীন মন্ডল বলেন, প্রথমে রাস্তার দুই পার্শ্বে খাড়া করে ইট গাথা দেখে মনে হয়েছে রাস্তা উঁচু হবে। পরে দেখি রাস্তায় নরমাল ইট ফেলে বড় বড় করে খোঁয়া করে সেই খোঁয়া পাতলা করে বিছিয়ে দিল। এরপর রোলার দিয়ে রাস্তার দুই পার্শ্বে খাড়া করে দেওয়া ইটগুলি দাবিয়ে দিল। নিষেধ করলেও শুনেনি বরং দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা খারাপ আচরণ করেছে।
জমিনপুর গ্রামের এমদাদুল হক বলেন, অনেক জায়গায় তারা মাটির মত ইট ব্যবহার করেছে। এতে মনে হয়েছে রাস্তা বেশিদিন টিকবেনা। তাছাড়াও তারা খোয়া অনেক বড় করেছে। সেই খোয়াগুলোও ঠিকমতো ডলেনি। রাস্তার দুই ধারের ইটগুলো ধসে গেছে। অনুরোধ করলেও তার শুনেনি।
একই গ্রামের হারেজ আকন্দ বলেন, রাস্তার যে পরিমাণ খোয়া দেওয়ার কথা তা না দিয়ে এজিন রোলার দিয়ে দেবে দিয়ে এজিনের ইটগুলি ভেঙে ফেলে দিয়েছে। এখন পিচ করার প্রস্তুতি চলছে, কিন্তু রাস্তার উপরের ময়লা ঠিকমতো পরিস্কার করা হয়নি। তাহলে রাস্তা টিকবে কতদিন। কাজের পুরোটায় অনিয়ম আর দুর্নীতি। আমরা এমন খারাপ কাজ চাইনা।
উদয়পুর গ্রামের কবির সরকার বলেন, প্রথমে রাস্তায় যে ইট দেওয়া হয়েছে হাত দিয়ে ধরলে ভেঙে যায় এবং পুর গ্রামের ছিদ্দিকের বাড়ির সামনে দীর্ঘদিনের একটা ড্রেন থাকলেও তা করেনি। মসজিদ থেকে কুদ্দুসের বাড়ী পর্যন্ত যে ড্রেনটি করা হয়েছে তা মাটির মত বালি দিয়ে করা হয়েছে। এখন দেখি সেগুলো ধষে গেছে। আর বাকি কাজের কথা তো বল্লামিনা না।
একই গ্রামের আঃ কাদের বলেন, দিনের মধ্যে এই রাস্তা দিয়ে ২০ থেকে ২৫ বার যাতায়াত করতে হয়। রাস্তা খুব ছোট। এমনিতেই একটি গাড়ী পার হলে আরেকটি গাড়ী পার হওয়ার রাস্তা থাকে না। তারপরও আবার দুই সাইডে মাটি না দেওয়ায় আরো বেশি সমস্যা হয়েছে। রাস্তার সাইডে প্যারাসাইড এর কাজ গুলিও খুব নরমার ইট ও বালু দিয়ে হালকা ভাবে করেছে। সরকার তো কাজের বাজেট কম দেয় না তাহলে, এত খারাপ হচ্ছে কেন? এ কাজ দেখার কি কেউ নেই?
ঠিকাদার আজম বলেন, কাজত অফিস বুঝে নিয়েছে আর ইট শক্ত হওয়ায় রোলার ঠিকমত ডলতে পারেনি। এটা পুরাতন রেটের কাজ। এ কাজে কেউ অংশগ্রহণ করেনি, আমি একমাত্র অফিসের অনুরোধে এ কাজটি করছি।
জয়পুরহাট প্রকৌশলী কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম আকন্দ বলেন, রাস্তার অনিয়মের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলে আমি লোক পাঠাচ্ছি। প্রয়োজনে আমরাও যাব।