বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কিশোরগঞ্জের ৩ উপজেলায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
বুধবার ৮ মে সকাল ৮ টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।চলবে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত।১ ম ধাপে কিশোরগঞ্জের ৩ টি উপজেলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ নির্বাচন।উপজেলা ৩ টি হলো কিশোরগঞ্জ সদর,হোসেনপুর ও পাকুন্দিয়া।নির্বাচনকে ঘিরে সবকিছু ছাপিয়ে এ ৩ টি উপজেলায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।ভোটাররা সানন্দে এসে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন লক্ষ করা গেছে।এখন পর্যন্ত কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায় নি।উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ৩ টি উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে জোরালো পদক্ষেপ। ফলে ভোটাররা শান্তিপুর্ণভাবে নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন।নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করতে জোরদার করা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা।
এদিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩ জন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।এ উপজেলায় আওয়ামীলীগের ২ জন ও বিএনপির একজন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে লড়াই করছেন।তারা হলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান,সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা নাজমুল আলম।
এ ছাড়াও এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৯ জন প্রার্থী।তারা হলেন খালেদ সাইফুল্লাহ সাফাত,আব্দুল জলিল,জোবায়ের আলম রাজিব, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, শাহজাহান কবীর হিমেল, মোহাম্মদ হাফিজ উদ্দিন, মো. আশরাফুল আরিফ, মোখলেছুর রহমান মিতুল,রিফাত উদ্দিন আহমেদ বচ্চন। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৩ জন লড়ছেন। তারা হলেন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাছুমা আক্তার,জেলা যুবমহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা ইসলাম সুইটি ও তাহমিনা আক্তার নাজমা।
পাকুন্দিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৭ জন।তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু,এ কে এম দিদার, এ কে এম হাবিবুর রহমান চুন্নু, আতাউর রহমান, এমদাদুল হক জুটন,কামাল হোসেন ও হাজী মকবুল হোসেন।ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৪ জন।তারা হলেন আতাউর রহমান, একেএম ফজলুল হক, আবুল কাশেম, মোহাম্মদ জুয়েল।মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ২ জন।তারা হলেন মোছা. ললিতা বেগম, শামসুন্নাহার আপেল।
হোসেনপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৭ জন।তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহেল,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিম,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ মাহবুবুল হক, মো. নাজমুল আলম, মো. আশরাফ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান মোবারিছ ও রৌশনারা রুনু।ভাইস-চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৩ জন।তারা হলেন নাঈম সুজন, আল-আমিন অপু, শফিউদ্দিন সরকার বাচ্চু।মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ২ জন।তারা হলেন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার ও ছাবিয়া পারভিন জেনি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোরশেদ আলম জানান,’নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দশনা দেয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু রাসেল জানান,উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে জোরালো পদক্ষেপ। র্যাব, পুলিশ, বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রেই পুলিশ ও আনসার সদস্যরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন রয়েছে।
জানা গেছে,সদর উপজেলার মোট ভোটার ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮১৮ জন।এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬৩২ জন।মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ১৮৩ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ৩ জন।সদর উপজেলার মোট ভোট কেন্দ্র ১২৭ টি।
পাকুন্দিয়া উপজেলায় মোট ভোটার ২ লক্ষ ২৪ হাজার ৬৬৯ জন।এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ১২ হাজার ৬৬৫ জন।মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ১২ হাজার ৪ জন।
পাকুন্দিয়া উপজেলায় মোট কেন্দ্র ৮৫ টি।
হোসেনপুর উপজেলার মোট ভোটার ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ১৬৭ জন।এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৫ হাজার ৫৫৬ জন।মহিলা ভোটার ৮০ হাজার ৬১১ জন।
হোসেনপুর উপজেলায় মোট কেন্দ্র ৫৯ টি।
এ তিনটি উপজেলায় সব মিলিয়ে মোট ভোটার ৭ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬৫৪ জন।
এ ৩ উপজেলায় মোট কেন্দ্র ২৭১ টি।
উল্লেখ্য,নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ সময় ছিলো ১৫ এপ্রিল।গত ১৭ এপ্রিল ছিলো মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ও ২২ এপ্রিল ছিলো প্রার্থীতা প্রত্যাহার শেষ দিন।২৩ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।