DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশুক্রবার ১৮ই জুলাই ২০২৫
ঢাকাশুক্রবার ১৮ই জুলাই ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে খেজুরের রস পান

Astha Desk
জানুয়ারি ১৯, ২০২৪ ৭:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে খেজুরের রস পান

সাইদুজ্জামান ভুইয়াঃ

মুরাদনগরে শীতের প্রভাতে মানুষ বিভোর খেজুরের রস পানে উষ্ণতার খোঁজে “ঠান্ডা বেশি হলে রস ভালো হয়-দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষ”।

কুয়াশার চাদরে তখনও আবৃত দিকবিদিক। চোখ মেলে তাকাতেই লক্ষ্য করলাম পূর্ব আকাশে সূর্যের দেখা মিলেনি। ইতোমধ্যে ভীড় জমতে শুরু করেছে খেজুরের রস খেতে যাওয়া মানুষদের। ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে একজন মধ্যবয়স্ক লোক বললেন বোতল-ফ্লাক্সগুলো দিন, কার কত লিটার অর্ডার ছিলো? বলছিলাম গোমতী নদী সংলগ্ন মুরাদনগর উপজেলার দড়িকান্দি গ্রামের কথা।

দেশব্যাপী চলমান তীব্র শীতের হিমেল হাওয়ায় উপজেলার ৩০৮টি গ্রামের অধিকাংশগুলোতে চলছে খেজুরের রস পানের ধুম। হাঁড়ভাঙা শীতের সকালে কর্মব্যস্ত সময় পার করছে রস বিক্রেতারা। এলাকাবাসীর কাছে রস থেকে খেজুরের রই নামেই অধিক পরিচিত। দূরদূরান্তর থেকে প্রতিদিন ছুটে আসছে শুধুমাত্র একগ্লাস রস পানের আসায়। আবালবৃদ্ধবনিতা কেউ বাদ নেই এই তালিকা থেকে। অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশে পরিবারপরিজন কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসে শীতের আমেজ উপভোগ করতে।

শীত উপেক্ষা করে রস খেতে যাওয়া তামিম ও মুশফিক বলেন, খেজুরের রস খেলে শরীর গরম হয়ে যায়। শীতের সময় সব বন্ধুরা একসাথে ৩মাইল পথ পাড়ি দিয়ে গোমতীর বেড়িবাঁধে আড্ডা করতে-করতে চলে আসি রস খেতে। আগের দিন সিরিয়াল দিয়ে রাখতে হয়, অন্যথায় রস পাওয়া দূরুহ। খেজুরের রস বেশিক্ষণ রেখে খাওয়া যায় না। সূর্যের আলোর পরশের সাথে-সাথে রসের কার্যকারিতা কমতে শুরু করে।

রস বিক্রেতা কফিল উদ্দিন বলেন, কৃষিজীবী মানুষ আমরা, শীতের প্রভাবে কাজে যেতে পারিনা। রই বেঁচে ভালো টাকা কামাই করি। প্রতিদিন অনেক দূর থেকে মানুষ রই খেতে আসে। ঠান্ডা বেশি হলে রই বেশি গাঢ় হয়। নিজের কিছু গাছ আছে, এলাকার অন্য গাছগুলোও চুক্তিতে কিনেছি। প্রতিদিন হাঁড়ি দিয়ে আসি রইয়ের জন্য। ভোরে রই নামিয়ে আনার পরেই বাড়ির উঠানে লেগে যায় লম্বা লাইন।

আরো পড়ুন :  খাগড়াছড়িতে জাতীয় যুবশক্তির সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ক্রেতাদের চিরাচরিত অভিযোগ সুযোগ পেলেই রসের সাথে জল মিশিয়ে দেয় বিক্রেতারা। ফলে নষ্ট হয়ে যায় রসের গুণাগুণ ও প্রকৃত স্বাদ। বিষয়টি নিয়ে নারাজি প্রকাশ করতে দেখা যায় অধিকাংশ বিক্রেতাদের। লিটার প্রতি মূল্য রাখা হয় ১১০ থেকে ১৩০ টাকা করে। গ্রামগুলোতে সকালে বাজারের পাশে একটা ব্যাপক অংশ জায়গা জুড়ে চলে শুধু রসের বেঁচাকেনা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাবেল খান পাপ্পু বলেন, খেজুরের রস মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শীতের দিনে সর্দি-কাশি এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন (বিষ) বের করে দিতে খেজুরের রস খুবই উপকারী। খেজুরের রসে বিদ্যমান ক্যালশিয়াম হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে, গাছে বাঁধা হাঁড়ি গুলোতে বাদুর অথবা, অন্যান্য ক্ষতিকর পোকামাকড় যেন মুখ দিতে না পারে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
[prayer_time]