নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় কোনো প্রশিক্ষণ ও ওস্তাদের সাহায্য ছাড়াই প্রতিমা তৈরি করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন এক কিশোর। পাল বংশের সন্তান না হয়েও শিশু বয়স থেকে সে প্রতিমা তৈরি করছে বলে জানা গেছে। যা দেখে অবাক হয়েছেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
গত চার বছর ধরে নিজের বাড়িতে নিজেই প্রতিমা গড়ে আর মন্ত্র পড়ে দুর্গাপূজা করে আসছে নির্মাণ দত্ত (১৪) নামের ওই কিশোর।
ভাষানচরে নিয়ে যাওয়া হবে রোহিঙ্গাদের: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
সে উপজেলার পৌর শহরের শিবগঞ্জ গ্রামের গোপাল দত্তের ছেলে। সে এম.কে.সি.এম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ছে। জানা যায়, দুর্গাপুর পৌর সদরে শিবগঞ্জ এলাকার গোপাল দত্ত ও নমিদা দত্ত এই দম্পতির ছোট ছেলে নির্মাণ দত্ত। গত চার বছর ধরে নিজেই প্রতিমা তৈরি ও পূজা করেন। ছোটবেলা থেকে নির্মাণ দত্তের ছবি আঁকাআঁকির কাজে প্রবল ঝোঁক ছিল। বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার মনে সাধ জাগে প্রতিমা তৈরির। কোনো ওস্তাদ ও প্রশিক্ষণ ছাড়া মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির চেষ্টা চালায়। ২০১৬ সালে প্রথম নিজেদের বাড়ির আঙিনায় মাটি দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে ফেলেন। তার এ প্রতিভা দেখে অবাক হন মা-বাবাসহ এলাকাবাসী। এভাবে প্রতিবছর বাড়ির আঙিনায় পূজামণ্ডপ তৈরি ও দুর্গা পূজা করে এই কিশোর।
গত এক মাসের প্রচেষ্টা ও নিপুণ হাতের নির্মাণশৈলী দিয়ে এবার সে তৈরি করেছে দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, মহিষাসুর, লক্ষ্মী ও সরস্বতীর প্রতিমা। রং-তুলির কাজও নিজের হাতেই করে। কোনো ডাইস বা ফর্মা ছাড়াই নিজ হাতে প্রতিমাগুলোর মুখমণ্ডল তৈরি করে এ কিশোর। এ কাজে কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসলেও এ কাজে কারো স্পর্শ বা সহায়তা নিতে পছন্দ করে না সে।
নির্মাণ দত্ত দেশ রূপান্তরকে বলে, আমার ইচ্ছা নিজ হাতে দেবী দুর্গা মাকে বানাব। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা ও সবার আশীর্বাদে পূজার আগে প্রতিমা তৈরি করতে পেরেছি এটাই আমার তৃপ্তি ও আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দারা বলেন, নির্মাণ দওের আত্মবিশ্বাস ও সাহস দেখে আমরা হতবাক। প্রতিমা তৈরিতে তার নিখুঁত কাজ সত্যিই অসাধারণ।
দুর্গাপুর উপজেলার পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু সরকার বাবুল দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রতিভাবান নির্মাণ দত্ত কয়েক বছর আগে থেকেই নিজের বাড়িতে প্রতিমা তৈরি কাজ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শুধু তাই না সে প্রতিবছর কমরেড মণি সিংহ মেলায় মণি সিংহের প্রতিকৃতি চিত্রাঙ্কন করে প্রথম হয়। ময়মনসিংহ বিভাগে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। বলতে গেলে শিশু বয়স থেকে অসম্ভব মেধা ও প্রতিভা সম্পন্ন শিল্পমনা নবম শ্রেণির এই কিশোর ছাত্রটি।