DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাবৃহস্পতিবার ২৮শে নভেম্বর ২০২৪
ঢাকাবৃহস্পতিবার ২৮শে নভেম্বর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কে থামছে না দুর্ঘটনায়,ঝরছে তাজা প্রাণ

News Editor
অক্টোবর ৯, ২০২০ ১২:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

খুলনা থেকে সাতক্ষীরার দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার। এই সড়কের সিংহভাগ গেছে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার উপর দিয়ে। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে প্রতিনিয়ত এই সড়কে ঝরছে তাজা প্রাণ। সড়কটিতে মৃত্যুর মিছিল কিছুতেই থামছে না। দিনের পর দিন দীর্ঘ হচ্ছে। খালি হচ্ছে হাজারো মায়ের বুক।  

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) ডুমুরিয়ার এ সড়কের ডুমুরিয়া মহিলা কলেজ মোড়ে ও জিলেরডাঙ্গা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহতও হয়েছেন বেশ কয়েকজন।  

এছাড়া সোমবার (৫ অক্টোবর) খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের খর্ণিয়া সেতুতে ট্রাকে ত্রিখণ্ডিত হয়ে এক বৃদ্ধ (৭০) নিহত হন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর খুলনার ডুমুরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক গ্রাম্য চিকিৎসক নিহত হন। ১৮ মার্চ এ সড়কের কাঁঠালতলা বিশ্বাস বাড়ির সামনে ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ডিজিএফআই কর্মকর্তা তারিয়েফ সুনাম দীপ (৩০) মারা যান। প্রায় প্রতিদিনই এ সড়কে কারো না কারো প্রাণ ঝরছে।

২০০৭ সালের ১৬ মার্চ এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ডুমুরিয়া উপজেলার বালিয়াখালি ব্রিজের কাছে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জাতীয় দলেন ক্রিকেটার মানজারুল ইসলাম রানা। সাজ্জাদুল হাসান সেতু নামের প্রথম শ্রেণির আরেক ক্রিকেটারেরও মৃত্যু হয় এ দুর্ঘটনায়।

খুলনা বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের তথ্য মতে, চলতি বছরে খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ডুমুরিয়ার অংশে। সেখানে প্রায় প্রতি তিনদিনে গড়ে একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।  

তাদের পরিসংখ্যান মতে, চলটি বছরের শুরু থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত খুলনা বিভাগে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে ৯৮৫টি। আর খুলনা জেলায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছ ২৯৮টি। এর মধ্যে শুধু খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ডুমুরিয়া অংশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছ ৮৯টি। এতে ঘটস্থল থেকে ৭ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে তারা। এছাড়া আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে ১৫১ জনকে। আহতদের অনেকে আবার হাসপাতালে মারা গেছেন, যার হিসাব পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে তারা ডুমুরিয়ার বালিয়াখালি সেতু, কাঁঠালতলা, খর্ণিয়া, চাকুন্দিয়া মাদ্রাসা ও গুটুদিয়াকে কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছে। এগুলো সব থেকে বিপদজনক এলাকা।

দুর্ঘটনা কবলিত এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কটি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। সড়কটিকে প্রশস্ত করার পর বেপরোয়া গতিতে চলছে যানবাহন। এছাড়া অনুমোদনবিহীন নছিমন, করিমন, ট্রলি, ইজিবাইকও চলছে দেদারছে। গাড়ির গতি বেশি থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। আবার বেপরোয়া গতি, প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালানো, গাড়ি চালাতে চালাতে মোবাইল ফোনে কথা বলাসহ বহু অনিয়ম ঘটে এ রাস্তায়। এসব কারণে রাস্তায় মৃত্যুর মিছিল লেগেই আছে। যাদের এসব নিয়ন্ত্রণ করার কথা তারাও উদাসীন।  

আরো পড়ুন :  বেনাপোলে তৃতীয় দিনের মতো চলছে পরিবহন ধর্মঘট, ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাত্রীদের ভোগান্তি

তাদের মতে, বাস-ট্রাক চালকদের ডোপ টেস্ট করা প্রয়োজন এবং হাইস্পিডে যে গাড়িগুলো চলে গতি নির্ধারক মেশিন দিয়ে চেকিং করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। এ সড়কটিতে অনেক মোড়। কিছু মোড় আছে যা দূর থেকে বোঝা দায়।  

এদিকে বৃহস্পতিবার মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে ডুমুরিয়ায় আলাদা সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হওয়ার পর নড়ে চড়ে বসেছেন উপজেলা প্রশাসন।  

দুর্ঘটনা রোধকল্পে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।  
 
এর মধ্যে রয়েছে- উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি,  ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অতিরিক্ত বোঝাই, লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের সহযোগিতায় রাস্তার কিছু গাছের ডালপালা কেটে রাস্তা দৃশ্যমান করার কাজ শুক্রবার থেকে শুরু হবে। ১৩ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর সমন্বয়ে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়ন করা হবে।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখার আহ্বায়ক এসএম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, করোনায় মৃত্যুর খবরের মধ্যে আরো একটি খবর আমাদের সবাইকে প্রতিনিয়ত ভাবিয়ে তুলছে। বিষয়টি সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিদিন বাড়ছে সড়কে মৃত্যুর সংখ্যা। বহু ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল করে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে রাস্তায়, যেগুলোর নিয়ন্ত্রণে সমস্যা রয়েছে।  

লাইসেন্সহীন অদক্ষ চালকের হাতে, এমনকী অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের হাতে গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হচ্ছে। মাদকাসক্ত চালকদের যানবাহন চালানো, লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন, ঢিলেঢালা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, আগে যাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা, নিয়ম না মেনে ওভারটেকিং, যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো, পেছনের বাসকে সামনে আসতে না দেওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলে এ সড়কে। অনেক চালক রাত-দিন গাড়ি চালান। অত্যধিক ক্লান্তি ও গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে।  

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:০০
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:১৪
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০৫
  • ১১:৪৯
  • ৩:৩৫
  • ৫:১৪
  • ৬:৩১
  • ৬:২০