ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ চলতে পারে আরো ৭ মাস। যদিও এই যুদ্ধ ও বেসামরিক হতাহত নিয়ে ইসরায়েল বৈশ্বিকভাবে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেগবি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম আল জাজিরা।
জাচি হানেগবি বলেন, আমার মনে হয়, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ অন্তত চলতি ২০২৪ সালজুড়ে চলবে।
বুধবার ইসরায়েলের পাবলিক ব্রডকাস্টার কান-এর সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, হামাস এবং ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) গোষ্ঠীর সামরিক ও শাসন ক্ষমতা ধ্বংস করতে আরো সাত মাস লড়াইয়ের প্রত্যাশা করছি আমরা।
আল জাজিরা বলছে, তার এই মন্তব্য এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন গাজায় প্রায় আট মাস ধরে আগ্রাসনের পর ইসরায়েল বিশ্ব মঞ্চে নিজেকে ক্রমবর্ধমানভাবে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দেখতে পাচ্ছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের অন্যান্য ঘনিষ্ঠ মিত্ররাও গাজায় বেসামরিক মানুষের মৃত্যু নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
সাক্ষাৎকারে হানেগবি মিসরের সাথে গাজার সীমান্তবর্তী শহর রাফাতে ইসরায়েলের চলমান অভিযানের পক্ষেও কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ২০০৭ সাল থেকে হামাস গাজাকে শাসন করা শুরু করার পর থেকে সীমান্ত এই অঞ্চলটি ‘চোরাচালানের রাজ্য’ হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি রকেট, প্রতিটি বিস্ফোরক ডিভাইস, প্রতিটি গুলি যে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হয়েছে তা এই সীমান্ত লঙ্ঘন করেই।
এদিকে বুধবার রাতে ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সরু ফিলাডেলফি করিডোরের ‘অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ’ নিয়ে নিয়েছে। মিসর এবং গাজার মধ্যে অবস্থিত এই বাফার জোনটি ১৯৭৯ সালের ইসরায়েল এবং মিসরের মধ্যে শান্তি চুক্তির অংশ হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এক টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, আমাদের বাহিনী ফিলাডেলফি করিডোরের অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এসব হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, আশ্রয়শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৮১ হাজারের বেশি। এ ছাড়া নিজেদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে ২০ লাখের বেশি মানুষ।