চিরনিদ্রায় যুবদল নেতা ইব্রাহিম খলিল
মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াছঃ
পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমালেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল খাগড়াছড়ি শাখার সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল (৩৭)।
পারিবারিক ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, শালিকার বিয়েতে স্বপরিবারে ফেনী যান তিনি। পরদিন ২৭শে এপ্রিল শারিরীক অসুস্থতা অনুভব করলে তাকে ফেনী হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্রেইন স্ট্রোক করেছেন বলে ধারনা দেন। শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটলে তৎক্ষণাত উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম এর বেসরকারি হাসপাতাল এভারকেয়ারে নেওয়া হয়। সময়ের ব্যবধানে অবস্থার অবনতি ঘটলে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাকে। এর পর শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে শনিবার ভোর রাত পর্যন্ত ৪ঘন্টা ব্রেনে অপারেশন করেন চিকিৎসকরা। অপারেশন সফল জানিয়ে পরবর্তী ৭২ঘন্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার পর শারিরীক অবস্থা সম্পর্কে জানাবেন বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে দেখতে যান খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূইয়াসহ হাজারো নেতাকর্মী।
জানা যায়, গত রাতে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে চুড়ান্তভাবে শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ার খবরটি জানানোর পর তাকে চট্টগ্রাম ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল সিএসটিসিতে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ ৭দিন মৃত্যুর সাথে লড়াইয়ের পার সেখানেই আজ বৃহষ্পতিবার (৪ মে) ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। খবরটি জানার পর থেকেই জেলাবাসী শোকে ফেটে পড়ে। শোকবর্তা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
একজন ইব্রাহিম খলিল যেনো হয়ে উঠেছিলেন পার্বত্য এ জেলার যুব সমাজের আইডল। দল-মত নির্বিশেষে তিনি ছিলেন সকলের প্রিয় পাত্র। এদিকে খাগড়াছড়ির সর্বস্তরের জনসাধারণ এমন জটিল মুহুর্তের খবর জানতে পেরে দল মত নির্বিশেষে তার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা প্রকাশ করেন। তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন, কতটা আন্তরিক ও বন্ধুসুলভ ছিলেন তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে সকলের বার্তায়।
ব্যক্তিজীবনে ইব্রাহিম খলিল বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও তার জনপ্রিয়তা ছাপিয়ে যায় সামাজিক ব্যক্তিত্বের আদলে। তিনি এই বয়সেই একইসাথে রাজনৈতিক ও সামাজিক উভয়ক্ষেত্রেই সমৃদ্ধি অর্জন করেন। তার বেশ কিছু সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের সাথেও জড়িত থাকার খবর পাওয়া যায়।
অমায়িক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সজ্জন ব্যক্তি ইব্রাহিম খলিল(৩৭) ছিলেন একাধারে সাবেক খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এবং সর্বশেষ খাগড়াছড়ি জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। সব শেষ গেলো ২০২১ এর খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৭ম পরিষদের পৌর মেয়র নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়ে করেছিলেন মেয়র নির্বাচন।
জানা যায়, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়েই ছিল তার সুখের সংসার। খাগড়াছড়ির টিএন্ডটি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকলেও ইসলামপুরে নিজস্ব জায়গায় বাড়ি নির্মান করেছেন তিনি, তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস থাকার সুযোগ হয়নি আর সেই বাড়িতে।
জানা গেছে আজ বৃহষ্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটায় খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় এবং পরে কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় কবরস্থানে সমাহিত করা হয় এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’কে।