জয়পুরহাটে ঘাসের পাতায় শিশির বিন্দু; জানিয়ে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত
জয়নাল আবেদীন জয়/জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
প্রতিবছরের মতো এবারেও শরতকে বিদায় এবং শীতকে স্বাগত জানিয়ে হেমন্ত এসেছে তার চিরচেনা রূপে। তাইতো শীতের আগমনে চির চেনা প্রকৃতি তার রূপ পাল্টিয়ে ফিরেছে আপন রূপে। রাতভর হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা সকাল পর্যন্ত চাঁদরের মত বিছিয়ে থাকছে দিগন্তজুড়ে। কমতে শুরু করেছে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও।
প্রায় গত এক সপ্তাহ ধরেই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। প্রতিদিনই নামছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে আসতে থাকায় এখন দিনে প্রচন্ড গরম অনুভূত হচ্ছে না। বিকেল থেকেই উত্তরের হালকা হিমেল বাতাসে শুরু হয় শীতের পরশ।
সন্ধ্যা থেকেই শুরু হচ্ছে হালকা কুয়াশা। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হালকা কুয়াশা রূপ নিচ্ছে মাঝারী কুয়াশায়। সকালে গাছের পাতায় শিশির বিন্দু জমে থাকছে অনেক বেলা অবধি। খুব ভোরে দেখা মিলছে কুয়াশা। শিশির বিন্দু ছড়িয়ে দিচ্ছে মৃদু শীতলতা। জনসাধারণেরা জানান, ভোরে বেশ কুয়াশা পড়ছে। এখন আর রাতে ফ্যান চালাতে হচ্ছে না।
রাতে পাতলা কাঁথা/ কম্বল জড়াতে হচ্ছে শরীরে। ভোর পর্যন্ত শীতের পরশ অনুভব হচ্ছে। তবে ঘন কুয়াশা এবং তীব্র শীত আসতে দেরি আছে। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা জানান, মৌসুমী বায়ু ধীরে ধীরে বিদায় নিতে শুরু করায় আকাশ পরিস্কার হচ্ছে। সেই সঙ্গে উত্তরের বাতাস শুরু হওয়ায় শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। সামনের দিনগুলোতে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে আরও কমতে শুরু করবে।
এখন দিনের বেলা তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকার কারণে এসি-ফ্যান চালালেও সন্ধ্যার পর থেকেই এগুলোর সুইচ অফ রাখতে হচ্ছে। শুরু হয়েছে শীতের পুরো প্রস্তুতি। শীতের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে শীতের সম্বল লেপ তোষক তৈরী শুরু করে দিয়েছেন উচ্চ ও মধ্যবিত্তরা।এদিকে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন লেপ তৈরীর কারিগররা। তুলা ব্যবসায়ীরা বলেন, তুলা ও কাপড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার আগের তুলনায় লেপের দামও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
তারপরও উচ্চ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন আগে ভাগেই লেপ সেলাই করছেন। কেউবা আবার পুরোনো লেপ নতুন করে সেলাই করে নিচ্ছেন। তবে শীতের প্রস্তুতি নেই খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষদের। হাতে কাজ কম ও দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির কারণে সংসার সামলানোটাই তাদের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তবে শীত নিয়ে শংকায় রয়েছেন তারা।
লেপ তৈরী করার মতো তাদের সামর্থ নেই। প্রচন্ড শীতে কাহিল মানুষদের জন্য প্রতি বছর সরকারি ভাবে শীতবস্ত্র বিরতণ করা হয়। এদিকে, শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, টমেটো, লাল শাকসহ বিভিন্ন ধরনের আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে।
তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। শীতের আগমন ঘটছে। কার্তিকের আগমনীতেই দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে শীতের আমেজ। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত অনুভূত হতে শুরু করেছে শীতের পরশ। ঘাসের ডগায় জমছে শিশির বিন্দু। পায়ের স্পর্শে অনুভূত হচ্ছে ঠান্ডা। ভোরের সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে মিষ্টি রোদ আর সবুজ ঘাসের পাতার ওপর শিশির বিন্দু জানিয়ে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত।