আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র শীত ও তুষার ঝড়ের কারণে অন্তত ২১ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া লাখ লাখ অধিবাসী বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। খবর বিবিসির।
দেশটির টেক্সাস অঙ্গরাজ্য সবচেয়ে বেশি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। সেখানকার অনেক এলাকায় ‘ব্ল্যাকআউট’ চলছে। বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ায় এই ঘাটতি তৈরি হয়েছে। অঙ্গরাজ্যটির লাখ লাখ অধিবাসী তীব্র শীতের মধ্যে বিদ্যুতের ঘাটতি মোকাবিলা করছে, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
এই চরম আবহাওয়া এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ পর্যন্ত চলবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। ঝড় সংক্রান্ত কারণে টেক্সাস, লুইসিয়ানা, কেনটাকি, নর্থ ক্যারোলাইনা ও মিজৌরিতে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, ঝড়ের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা টেক্সাসের ওপর দিয়ে পার হয়ে গেছে। তবে ১০ কোটি মানুষকে এখনো আবহাওয়া সতর্কতার মধ্যে রাখা হয়েছে।
এই শীতল ঝড় মেক্সিকোর মধ্য ও উত্তরাঞ্চলেও পৌঁছেছে। সেখানকার লাখ লাখ মানুষ কয়েক দিন ধরে অনিয়মিতভাবে বিদ্যুতের ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে রয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা ও কার্বন মনোক্সাইড সংক্রান্ত বিষক্রিয়া। তীব্র ঠাণ্ডার মধ্যে গরম থাকার জন্য গাড়ি ও বাসার জেনারেটর চালু রাখার ফলে এই বিষক্রিয়ার ঘটনাগুলো ঘটেছে। এ বছর ঠাণ্ডা আবহাওয়ার দিনগুলোতে অন্তত ৩শটি কার্বন মনোক্সাইড সংক্রান্ত দুর্ঘটনা ঘটেছে।
টেক্সাসের ইলেক্ট্রিক রিলায়াবিলিটি কাউন্সিল জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে ঘাটতি তৈরির মাধ্যমে বিদ্যুতের সরবরাহ দেয়া হবে। অঙ্গরাজ্যের ২০ লাখের মতো মানুষ এখনো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। বুধবার গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানান, টেক্সাসের ১২ লাখ মানুষকে আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে, এখনো অনেককে দেয়ার কাজ চলছে।
আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনো নিজস্ব প্রাকৃতিক গ্যাস টেক্সাসের বাইরে রফতানীতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন গভর্নর অ্যাবট। বিদ্যুতের এই ব্যাপক ঘাটতির ফলে সেখানকার কিছু কর্মকর্তা ও অধিবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
টেক্সাসের বাড়িঘর সাধারণৎ ঠাণ্ডা আবহাওয়া প্রতিরোধের উপযোগী করে তৈরি করা হয় না। তাই বাসার উষ্ণায়ন সিস্টেম যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়। গত কয়েক দিনে সরবরাহের পানি বরফ হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানকার অনেক বাসাবাড়ির পানির পাইপ ফেটে গেছে। অনেক অধিবাসী পাইপে কম্বল পেঁচিয়ে গরম রাখার চেষ্টা করলেও তা কাজে আসছে না।
রাস্তা বরফে ঢেকে যাওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও বেড়েছে। সম্ভব হলে বাইরে বের না হতে অধিবাসীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।