রেলমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীর পরিদর্শনের পর অবশেষে পদ্মা সেতুর রেল প্রকল্পের নকশা জটিলতার জট খুলছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে- সেতু বিভাগ, রেলের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ও পরামর্শকেরা একসঙ্গে বসে করবেন এ সমস্যার সমাধান। তাতেও মতৈক্য না হলে, দায়িত্ব দেয়া হবে বুয়েটকে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প কর্তৃপক্ষ মাওয়া অংশের ১৪, ১৫ নম্বর ও জাজিরা প্রান্তের ২৫ এর দুটি পিলারের নকশা নিয়ে আপত্তি জানায় আগস্টের শেষের দিকে। কেননা রেল প্রকল্পের যে ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারটি নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে প্রয়োজনীয় উচ্চতা নেই এবং একই সঙ্গে রাস্তার দুপাশে যে প্রশস্ততা দরকার সেটিও নেই। যার কারণে ভারি যে যানগুলো রয়েছে সেগুলো এই রেল লাইনের নিচ দিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠতে পারবে না।
এরপর থেকে কাজ বন্ধ থাকে প্রায় একমাস, চলে চিঠি চালাচালি। এ অবস্থায় সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ফাস্ট ট্র্যাক এ প্রকল্পের নকশা জটিলতার দ্রুত সমাধানের নির্দেশ আসে। বৃহস্পতিবার সেতু প্রকল্পে পরিদর্শনে যান পরিকল্পনা এবং রেলমন্ত্রী। মূল সেতুর নির্মাণ যখন শেষের দিকে তখন কাজ শুরুর প্রায় পাঁচ বছর পর এসে রেল সংযোগ প্রকল্পের নকশা জটিলতা চোখে পড়েছে সেতু বিভাগের। এতে প্রশ্ন উঠেছে রেল ও সেতু বিভাগের কাজের সমন্বয় নিয়েও।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এটা ঠিক আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন। যে কোন বড় প্রকল্প ভুল হতে পারে, এটাকে স্বীকার করে সমাধান করতে হবে। পিলার এখনও সম্পন্ন হয়নি, হওয়ার পর ধরা পড়লে আরো ভয়ংকর হতো। উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হবে। লুকোবার কিছু নেই। সব ইঞ্জিনিয়ারকে একত্রিত করে এটার সমাধান করা হবে।
সরকারের উন্নয়ন যারা দেখে না, তাদের চোখে ছানি পড়েছে
তবে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, এটা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবলেম, আমাদের এখানে এক্সাপার্টরা আছেন। তারা এটা নিয়ে বসবে এবং কনসালটেন্টরা আছেন। সর্বোপরি বুয়েট আছে তারা দুই পক্ষের ডিফারেন্স অব অপিনিয়ন হলে সেটার সমাধান করবে।
এদিকে দুই প্রকল্পের পরিচালকসহ বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে নানা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এ পর্যন্ত নকশা জটিলতার যেসব সম্ভাব্য সমাধান এসেছে তাতে, কোন পিলারই ভাঙতে হবে না। ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড। নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের জুনে।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি দুই পর্যায়ে বিভক্ত। প্রথম পর্যায়ে ঢাকা থেকে মাওয়া, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে জাজিরা, শিবচর ও ভাঙ্গা জংশন হয়ে ভাঙ্গা স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত হবে। আর দ্বিতীয় পর্যায়ে ভাঙ্গা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোর জেলা রেলপথে যুক্ত হবে।