পাঁচবিবির আওলাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার বেহাল দশা
মোঃ জয়নাল আবেদীন/জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আওলাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদাসীনতা ও অবহেলার কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় শিক্ষা ব্যবস্থা বেহাল দশায় পরেছে। শতভাগ উপবৃত্তি সুবিধা থাকা সত্বেও অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কিন্ডার গার্টেন বা অন্য স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন। এমনকি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য হওয়ার পরেও তাদের সন্তানকে অন্য স্কুলে ভর্তি করেছেন বলে জানা গেছে। অভিভাবকদের অভিযোগ বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাশ করার জন্য শিক্ষকদের বললেও তাদের সেই অভিযোগ আমলে না নিয়ে তারা দিনের পর দিন নিজের খেয়াল খুশিমত স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। সে কারনে বাধ্য হয়ে অভিভাবকরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্কুলের প্রধান ও অন্যান্য শিক্ষকগন বলেন, অভিভাবকদের করা এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। করোনাকালীন সময় পার করে সবেমাত্র পাঠদান শুরু করা হয়েছে। তারা আশা করছেন অচিরেই সেগুলোর সমাধান হয়ে যাবে।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, আওলাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র/ছাত্রীর মোট সংখ্যা ১১৫ থাকলেও স্কুলে সব ক্লাশ মিলে দেখা মেলে মাত্র ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্র ছাত্রী । অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীরা রোজার মাস হওয়ার কারণে স্কুলে আসেনি বলে শিক্ষকরা জানান।
এ সময় স্কুলে আসা অভিভাবকরা সাংবাদিকদের বলেন, স্কুলের শিক্ষকরা ভালমত ক্লাশ করেন না। আমরা শিক্ষকদের বললে তারা বলেন, এটা সরকারী স্কুল। ছাত্র/ছাত্রী না থাকলেও শুধু ঘর থাকলেই আমরা বেতন পাবো। স্কুলের দাতা সদস্যের ছেলে আবু ছাদেক চৌধুরী বলেন, স্কুলটি সরকারী হওয়ার পর থেকে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। এই স্কুলের ফোর ফাইভের ছাত্র ছাত্রীরা কোন অক্ষর চিনে না। অভিভাবক সাহারা বেগম ও মিনারা বেগম বলেন, শিক্ষকরা নিজের ইচ্ছেমত স্কুলে আসে যায়। আবার স্কুলে এসেই ক্লাশে না গিয়ে নিজেদের কাজ ও গল্প গুজব নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য কৃষ্ণ চন্দ্র মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ে সরকারী ভাবে আসা বরাদ্দের কোন হিসাব দেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক ছাইদুর রহমান সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, করোনাকালীন সময় দুই আড়াই বৎসর কোন স্কুলে লেখা পড়া হয়নি। ক্লাশ ওয়ানের যে বাচ্চা ক্লাশ থ্রিতে উঠেছে, সে বাচ্চাটা কেমন করে অক্ষর চিনবে। এ বছর (২০২৩ সালে) আবার ঠিক মত পড়াশুনা চালু হয়েছে। ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশুনার মান ভাল করতে আমরা বিভিন্ন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আশা করি অচিরেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আর স্কুলে সরকারী অনুদানের টাকা স্বচ্ছতার সাথে ব্যবহার করা হয়।
বিদ্যালয়ের সভাপতি এনামুল হক বলেন, আগে এই স্কুলে কি হয়েছে আমার জানা নেই। তবে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্কুলে যাবতীয় কাজ সুষ্ট ও সুন্দর ভাবে পরিচালনার জন্য চেষ্টা করছি।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আজিজুল ইসলাম বলেন, এরকম অভিযোগ আমাকে কেউ দেয়নি, আপনাদের মাধ্যমেই জানলাম। তবে বিষয়টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।