প্রকৃতি প্রেমী ডাঃ শামসুদ্দিন হেলালের ছাদবাগান
রিয়াজুল হক সাগর/রংপুর প্রতিনিধিঃ
একজন দেশর সনামধন্য সিকিৎসক হিসাবে বেশ পরিচিত, রংপুরের তুষ্টনীড়ে (বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর সামনে গেলে আপনি দেখতে পারবেন তার হাতে তৈরী সবুজ গাছপালার সমারহ ছাদবাগান, ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল (অবসরপ্রাপ্ত) অধ্যাপক রক্ত পরিসন্ঞ্চিলন বিভাগ তিনি ছাত্র জীবন থেকে প্রকৃতি প্রেমি একজন মানুষ।
শিশুকাল থেকে গাছের প্রতি ভালবাসা গাছ লাগানো তার একমাত্র নেশা। তিনি ছাত্র রাজনীতিও করতেন, সেখানেও তিনি গাছ লাগাতে সবাইকে উৎসাহিত করতেন। রাস্তার ধারে কিংবা ফাকা কোন জায়াগায় নিজের অর্থায়নে গাছ লাগাতেন। তিনি স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি সকল মানুষকে গাছ লাগাতে উৎসাহিত করতেন। তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসা সকল রুগীদের গাছ লাগানোর পরার্মশ বা উপদেশ দিতেন।
একজন সিকিৎসক হয়ে দেশর বিভিন্ন জায়াগায় তার পদচারনা ছিলো। সরকারি চাকুরিতে বদলি জনিত কারনে দেশের বহু জেলায় তার বিচারন ছিলো, সেখানেও তিনি গাছ লাতে সাধারণ মানুষের সাথে সু সম্পর্ক তৈরী করে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গাছ লাগাতেন এই চিকিৎসক।
তিনি অবসর গ্রহণ করেন ২০১৬ সালে অবসর সময় তিনি এখনও মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তার পাশাপাশি তিনি একটি বাড়ির ছাদের উপড়ে বাগান লাগিয়েছেন। সেখানে প্রায় দেশি বিদেশী দুই শতাধিক প্রজাতির গাছ আছে।
তার দুটি কন্যা সন্তান। বর্তমানে বড় মেয়ে দেশের বাইরে আর ছোট্র মেয়ে ঢাকায় থাকেন। বাড়িতে এখন তিনি আর তার স্ত্রীসহ বাস করেন তিনতলা বিশিষ্ট বাড়িতে। নিচ তলায় ছাত্রাবাস দ্বিতীয় তলায় তাদের থাকার ঘর আর উপড় তলায় ছাদবাগান। সেই বাগানে গেলে যে কোন মানুষের মন জুরিয়ে যাবে।দেশের মাটিতে অনেক বড় বড় বিল্ডিং বাসা বাড়ি আছে, কিন্তু এই বাড়িটি একটি ব্যতিক্রম বাড়ি বলা চলে।
প্রকৃতি প্রেমী একজন মানুষ না আসলে আপনি বুঝতে পারবেন। তাকে একটি প্রশ্ন করা হয়েছিলো, পৃথীবিতে এতো সব ভালকাজ থাকতে আপনি গাছের প্রতি আপনার আগ্রহ কেন?
তিনি তার উত্তরে বলেন, গাছ আছে বলেই আজ প্রাণ আছে, বাতাস বহমান পাখির সুর শুণতে পাই। গাছের সাহায্যে প্রাণের জন্ম হচ্ছে। আপনি আমি সকলেই আজ গাছের উসিলায় বেচেঁ আছি। গাছে না থাকলে প্রাণের জন্মহতো না। তারসাথে আলাপ চারিতায় অনেক তথ্য পেলাম।
তার ছাদবাগানে দেশি বিদেশি প্রায় দুইশতাধিক ফলজ বনজ ফুলের চারা রয়েছে। তিনি ফজরের নামায আদায় করে ছাদে উঠে গাছদের পরিচর্যা শুরু করেন। সেই সাথে তার সময় কাটে অবসর সময়। প্রতিটি গাছ তার হাতের র্স্পশ নতুন প্রাণ ফিরে পায় নতুন করে। সারাদিন গাছের সেবায় ন্যাস্ত থাকেন এই গুণি চিকিৎসক।ফুলে ফলে ভরা এই বাগান অনেক সুন্দর যে কোন মানুষ দেখলে তার ছাদ বাগানের প্রেমে পড়ে যাবে।
ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল একাই যে বাগানের পরিচর্যা করেন তা কিন্তু নয়। তার সাথে তার সহধর্মিনীর অবদান অনেক। সংসাসের কাজকর্ম সেরে ছাদবাগানের পরিচর্যায় নেমে পড়েন সকাল থেকে সন্ধা রাত পর্যন্ত।
ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল শুধু গাছ প্রেমী মানুষ নয়, তিনি পশু পালনেও আগ্রহী ও দক্ষতার সাথে পশু পালন করেন। তার বাড়িতে গেলে প্রথমে আপনার চোখে পড়বে দুটি কুকুর, অপরিচিত কাউকে দেখলে আপনার গায়ে উঠতে পারে, এমন মনে হবে আপনার। কিন্তু ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল যখন বলবে চিন চিন ঠিক তখনি কুকুর বুঝতে পারে আমার মালিকের পরিচিত কেউ, অবাক দৃষ্টিতে আপনাকে চেয়ে থাকতে হবে।
অনেক প্রকারের আপনি বিড়ালও দেখতে পারবেন তার বাড়িতে। ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল একজন সৎ সাহসী সংগ্রামী মানুষ, চিকিৎসা সেবায় তিনিতার জীবনকে উৎসর্গ করেছেন তার চিকিৎসা সেবা দিয়ে।ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল আট দশজন মানুষের চেয়েও একজন দক্ষ বাবা হিসাবেও সু-পরিচিত সমাজে।
সমাজে অবহেলিত মানুষকে নিয়ে ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল তার কর্মকান্ড চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন সব সময়। ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল তার এলাকায় গাছ প্রেমী হিসাবে তার অবদান অনেক।খোলা জায়গায় মাঠের ধারে রাস্তার পাশে যে কোন স্থানে ফাঁকা জায়গা দেখলে নিজের অর্থে গাছ লাগান তিনি।
ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল একটি স্বপ্ন দেখেন আমাদের দেশে তালগাছ আর খেজুর গাছ দিনে দিনে কমে যাচ্ছে সেটাকে কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়।বাংলাদেশে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ তালগাছ, সেই খেজুর তালগাছ কিভাবে রক্ষা করা যায় সেই ব্যপারেও তিনি কাজ করছেন বিভিন্ন ভাবে। রেল লাইলে ধারে বেশ কিছু খেজুর গাছ লাগাতেও দেখা যায় তাকে।
তার পরিকল্পনা দেশের সব রেল লাইনের ধারে যদি খেজুর তালগাছ লাগানো যায়,আমাদের দেশে বর্জপাত কম হবে খেজুরের রস থেকে আমরা খাঁটিগুর পাবো। আমাদের ভবিৎত প্রজম্মদের হাতে এমন কিছু দিয়ে যেতে চাই তারা যেন আমাদের দেশকে মায়ের মত আপন মনে করেন।দেশকে এগিয়ে নিতে পারে এমন ভাবনা তার মধ্যে আমরা দেখতে পাই।
ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল রংপুরের একজন গুণিজন তিনি সমাজে একজন সফল মানুষও বটে।তার ছাদবাগান দেখলে আপনার মনে হবে।ডাঃ শামসুদ্দিন হেলালের চিন্তায় চেতনায় দেশপ্রেম, প্রাণীকুলে প্রেম, গাছের সাথে প্রেম, সব জায়গায় তার প্রেম দেখবেন আপনি তার কাছে গেলে। আপনার মনে হবে কতদিনের পরিচিত মনে হয় ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল। লোকটিকে দেখলে আপন মনে হয় তাই সকলে তাকে শ্রদ্ধা করেন বেশ।
ডাঃ শামসুদ্দিন হেলাল বড় মনের একজন মানুষ যাহাকে বলে সাদা মনের মানুষ। যে কোন বয়সের মানুষ তার ছাদবাগানের প্রেমে পরে যাবেন অনায়াসে। তার ছাদবাগানের দুইশত প্রজাতির গাছপালা দেখে আপনার চোখ কপালে উঠে যাবে।তার হাতের ছোঁয়ায় প্রতিটি গাছ তাকে শ্রদ্ধা করে তার পায়ে লুঠিয়ে পড়ে আপনার এমন মনে হবে বিষয়টি ভাবিয়ে তুলবে সকলকে। তার প্রকৃতির প্রতি এমন প্রেম দেখে আপনাকে অবাক করে তুলবে।