সৌদি আরবগামী ফ্লাইটের টিকিটের জন্য আন্দোলনকারীদের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানানো ব্যক্তিকে নিজের সাবেক কর্মী বলে স্বীকার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। মো. নাজমুল করিম রিটু নামের ওই ব্যক্তি গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের পক্ষে লিখিতভাবে কিছু দাবি তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি নিজের পরিচয় দিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সাবেক সমন্বয়ক হিসেবে।
সেই দাবিদাওয়াসংবলিত আবেদনের একটি অনুলিপি গতকাল বৃহস্পতিবার ভিপি নুরের কাছে পাঠিয়ে জানতে চাইলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যে ছেলেটার কথা বলা হচ্ছে সেই ছেলেটা আগে আমাদের সংগঠনে সক্রিয় ছিল। কিন্তু শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে কিছুদিন আগে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, তার ভাই সৌদিপ্রবাসী। টিকিট নিয়ে ঝামেলা হওয়ার কারণে সে সেখানে গিয়েছিল। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নয়। এমনকি আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও যায়নি।’
নুর আরো বলেন, ‘প্রবাসীদের সমস্যার কথা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় সে নিজে থেকেই সেখানে গেছে। তবে প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে তার যে ভূমিকা সেটি খুবই প্রশংসনীয়। তাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম আটকে পড়া সৌদিপ্রবাসীদের টিকিটের দাবিতে আন্দোলন, বিক্ষোভের পেছনে তৃতীয় পক্ষের উসকানির ইঙ্গিত করেছেন। বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত দুদিন ধরে বলে আসছেন, রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের পক্ষে দাবি-দাওয়া নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসা ব্যক্তি নিজে প্রবাসী নন, রাজনীতিবিদ।
আরও পড়ুনঃগরিব ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে রক্তক্ষরণ বন্ধে ইমরান খানের আহ্বান
ভিপি নুরের সাবেক কর্মী মো. নাজমুল করিম রিটু পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর আবেদনপত্রে সাতটি দাবি জানিয়েছিলেন। এর প্রথমটি ছিল, প্রায় দুই লাখ সৌদিপ্রবাসীর জন্য ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা; বিমান, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসসহ সব এয়ারলাইনসকে চলাচলের অনুমতি দেওয়া।
দ্বিতীয় দাবি ছিল, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যাদের ভিসা ও ইকামার মেয়াদ শেষ হচ্ছে তাদের ভিসা ও ইকামার মেয়াদ আরো একবার বাড়াতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ জানানো। তৃতীয় দাবি ছিল, রিটার্ন টিকিটে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া যাবে না। সাত কর্মদিবসের মধ্যে ৩৩৮ প্রবাসীর নিঃশর্ত মুক্তি ছিল চতুর্থ দাবি।
পঞ্চম দাবি ছিল, বিদেশে বাংলাদেশের সব মিশনকে ঢেলে সাজানো ও ওয়ান স্টপ সেবা চালু করা। অসহায়, গরিব প্রবাসী বিদেশে মারা গেলে তার মরদেহ দেশে বিনা খরচে আনার ব্যবস্থা করা ছিল ষষ্ঠ দাবি। সপ্তম দাবি হিসেবে ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সোনারগাঁও হোটেলে প্রবাসীদের ওপর পুলিশের অমানবিক নির্যাতনের বিচারের কথা বলা হয়েছে।