DoinikAstha Epaper Version
ঢাকামঙ্গলবার ১৩ই মে ২০২৫
ঢাকামঙ্গলবার ১৩ই মে ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

ফুলছড়িতে শনি ও মঙ্গলবার বিক্রি হয় ৪কোটি টাকা শুকনা মরিচ

Astha Desk
মার্চ ২৩, ২০২৩ ২:১১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফুলছড়িতে শনি ও মঙ্গলবার বিক্রি হয় ৪কোটি টাকা শুকনা মরিচ

 

ওমর ফারুক রনি/গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ

 

সূর্য্য উঠার পর পরেই ফুলছড়ি হাটে আসতে থাকে মরিচের বস্তা। সারিসারি সাজানো লাল টুকটুকে মরিচের বস্তায় হাটের কানায় কানায় ভরে দৃষ্টি নন্দন হয়ে উঠেছে। শুরু হয়ে যায় বেচাকেনার হাকডাক। সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার হাটে দুপুরের আগেই কমপক্ষে আড়াই হাজার মণ শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

গাইবান্ধা জেলার ব্রহ্মপুত্র নদী বেষ্টিত ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলে মরিচ চাষ হয়েছে ৯ শত ৯২ হেক্টর জমিতে। চরাঞ্চলে মরিচ চাষ বেশি হওয়ার কারণে জেলার মধ্যে একমাত্র মরিচের হাট হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে এটি। উপজেলা গজারিয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদী সংলগ্ন হাটে বর্ষায় নৌকাযোগে এবং শুকনো মৌসুমে ঘোড়ার গাড়িতে করে টেংরাকান্দি, মোল্লারচর, খোলাবাড়ি, ফজলুপুর, এরেন্ডবাড়ি, উড়িয়া, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল এবং জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জের বকসীগঞ্জের কয়েকটি চর থেকে কৃষক ও পাইকাররা মরিচ বিক্রি করতে আসেন এই মরিচ হাটে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবছর জেলার ৭ উপজেলায় ২ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে মোট উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৭৫ মেট্রিক টন শুকনা মরিচ। এর মধ্যে শুধু ফুলছড়িতে ৯ শত ৯২ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৩৮ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদ করা হয়েছে জেলার ছয় উপজেলায়।

 

গজারিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও মরিচ হাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি জিহাদুর রহমান মওলা বলেন, ফুলছড়ি হাটে হাইব্রিড, বগুড়ার জাত ও স্থানীয় জাতের শুকনো মরিচ বেশি আমদানী হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যেমন বগুড়া, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, প্রাণ কোম্পানিসহ অন্যান্য কোম্পানির প্রতিনিধিরাও এ হাট থেকে শুকনো মরিচ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

 

পার্শ্ববর্তী জেলা বগুড়া থেকে ফুলছড়ি হাটে মরিচ কিনতে এসেছেন সিরাজুল ইসলাম ব্যাপারীরা। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ভোরবেলা ট্রাক নিয়ে এ হাটে মরিচ কিনতে এসেছি। আজকের হাটে মরিচের দাম খুব চড়া। তবে ফুলছড়ির মরিচ ভালোমানের। মরিচ কিনলাম প্রায় ৩৫ মণ। প্রতিমণ মরিচ গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার টাকা পরে গেছে।

 

পাইকারি মরিচ কেনার জন্য ঘোড়াঘাট থেকে এসেছেন ব্যাপারী খলিলুর রহমান (৪৫)। তিনি বলেন, প্রতি বছরেই এহাট থেকে শুকনা মরিচ কিনে নিয়ে গিয়ে দিনাজপুরের বিভিন্ন হাট-বাজারের বিক্রি করি। গত বছর মরিচ কিনেছি এই ১০ থেকে সাড়ে ১০ হাজারের মধ্যে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর মরিচের মান ভালো। কিন্তু দাম টা খুবই চড়া।

 

উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের গলনাচরের কৃষক আব্দুল মজিদ (৩৬) বলেন, বিঘা প্রতি কাঁচামরিচ উৎপাদনে ব্যয় হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। বিঘায় ৫০ মণের বেশি মরিচ উৎপন্ন হয়। ৫০ মণ কাঁচামরিচ জমিতে লাল রং হয়ে পাকার পর তা রৌদ্দে শুকিয়ে ১০ মণের মত শুকনা মরিচ হয়। শুকাতে শ্রমিকসহ অন্যান্য আরও খরচ হয় প্রায় হাজার দশকে টাকা। সে হিসেবে ১০ মণ মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। ব্যয় বাদে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার মত আয় হয়।

 

মরিচ বিক্রেতা বাজে ফুলছড়ি গ্রামের আব্দুর মনসুর (৫৫) জানান, এহাটে মরিচ বিক্রি করতে আসেন প্রায় হাজার খানেক কৃষক। বগুড়া, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, প্রাণ কোম্পানিসহ কয়েকটি জেলা থেকে প্রায় শতাধিক ব্যাপারী আসে মরিচ ক্রয় করতে।

 

ফুলছড়ি হাট ইজারাদার বজলুর রহমান মুক্তা জানান, সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার দুদিন সকাল সাতটা থেকে হাট বসে। প্রতি হাটে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার মণ শুকনো মরিচ বিক্রি হয়। প্রতিমণ মরিচ ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

 

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ খোরশেদ আলম জানান, এ জেলার সাতটি উপজেলায় যে পরিমাণ মরিচের চাষ হয় তার অর্ধেকই উৎপন্ন হয় ফুলছড়ি উপজেলায়। আবহাওয়া ও চরের উর্বর মাটিতে দিনদিন মরিচ চাষের পরিমাণ বাড়ছে। চরের লোকজন মরিচ চাষে ঝুঁকে পরেছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শসহ সবধরণের কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৩:৫৩
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ১৮:৩৫
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৩:৫৮
  • ১১:৫৮
  • ১৬:৩২
  • ১৮:৩৫
  • ১৯:৫৭
  • ৫:১৮