নোয়াখালীর সুবর্ণচরের জাহাজমারা গ্রামের নুরজাহান বেগমকে হত্যা করার জন্য কসাইয়ের সঙ্গে ৮ হাজার টাকার চুক্তির কথা স্বীকার করেছে ছেলে হুমায়ুন কবীর। এ ব্যাপারে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে হুমায়ুন। জবানবন্দি থেকে জানা যায়, নুরজাহান তার প্রথম ঘরের সন্তান বেলাল হোসেনকে একটু বেশি আদর করতেন বলে অভিযোগ হুমায়ুনের। মাকে জামিনদার করে ৪ লাখ টাকা ঋণ নেয়ার পর গত বছর ইটভাটায় কাজ করতে গিয়ে বেলাল মারা যান। এ ঋণের টাকা পরিশোধ করা নিয়ে মা জাহানারার সঙ্গে হুমায়ুনের দ্বন্দ্ব লাগে। এরপর মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে হুমায়ুন।
২ অক্টোবর বন্ধু নীরব, মামাতো ভাই কালাম, মামাতো বোনের জামাই সুমনকে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। নীরবের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৮ হাজার টাকা চুক্তিতে কসাই নুরুল ইসলামকে ভাড়া করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী মধ্যরাতে হুমায়ুন, নীরব, কালাম, সুমন ও কসাই নুরুল ঘরে ঢুকে নুরজাহানের হাত-পা চেপে ধরে এবং হুমায়ুন বালিশ দিয়ে তার মুখ চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পরিকল্পনা ছিল লাশের টুকরাগুলো ধানক্ষেতে পুঁতে ফেলবে। কিন্তু লাশটি টুকরো করার পর ভোর হয়ে যাওয়ায় কসাই নুর সেখানে আর থাকতে রাজি হয়নি। টুকরোগুলো তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলে সবাই চলে যায়। কসাইকে দেয়ার জন্য হামিদ ও ইসমাইল ৮ হাজার টাকা দিয়েছিল।
সেখান থেকে দুই হাজার টাকা রেখে নীরব ছয় হাজার টাকা নুরুলকে দেয়। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে হুমায়ুনের বন্ধু নীরবকে আটক করে। এরপর কসাই নুরুলকে আটক করা হয়। ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নুরুল জবানবন্দি দেয়ার পর হুমায়ুনকে গ্রেফতার করা হয়। হুমায়ুনের দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চরজব্বর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইব্রাহিম খলিল বাদী হয়ে হুমায়ুনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন।
মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবিতে স্থানান্তরিত হয়। চরজব্বর পুলিশের সহায়তায় একে একে সব আসামিকে গ্রেফতার করে ডিবি। এরপরই হুমায়ুন, নীরব, কসাই নুরুল ও সুমন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দেয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক জাকির হোসেন জানান, কালাম, ইসমাইল ও হামিদ ডিবির রিমান্ডে রয়েছে।