ঢাকা ০৮:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাত্র ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ দখলের হুমকি

Doinik Astha
Doinik Astha
  • আপডেট সময় : ০২:২৩:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১০৯৭ বার পড়া হয়েছে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিম নাগরিকদের নিয়ে মাত্র ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ দখলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন রাজ্যের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি টিংকুর রহমান বিশ্বাস এই হুমকি দিয়েছেন। তার এই হুমকির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু মুসলিম সেলের সভাপতি টিংকুর রহমান বিশ্বাস বলেন, গতকালও আমাদের চোখে পড়েছে বিএনপি নেতা আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যঙ্গ করছিলেন। এখানে সংখ্যালঘু মুসলিম যারা আছি আমাদের জন্যই যথেষ্ট বাংলাদেশ। আমি কালকেও বলেছি, বর্ডার খুলি দিন ১৫ মিনিটের জন্য, বাংলাদেশ দখল করে নেব। পুলিশ লাগবে না, ফোর্সও লাগবে না।

তিনি বলেন, যে নিজের জাতির পিতাকে চেনে না, মূর্তি ভাঙে তাদের কাছ থেকে আর কী আশা করতে পারি। ১৫ মিনিটের জন্য খুলে দিক বর্ডার, পুলিশ লাগবে না; আমরা যারা সংখ্যালঘু মুসলিম আছি পশ্চিমবঙ্গে আমাদেরই যথেষ্ট দখল করা বাংলাদেশ।

ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করে তৃণমূলের এই নেতা আরও বলেন, গোটা ভারতবর্ষ লাগবে না, আমরা ৩২ কোটি মুসলমান থাকি ভারতবর্ষে। এতো জনও লাগবে না। আমরা পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরাই দখল করে নিতে পারবো।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়নের অভিযোগের ঘটনায় প্রতিবেশী ভারতের রাজনীতিকদের বিতর্কিত মন্তব্য থামছেই না। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও বিরোধীদল বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রায় প্রত্যেকদিনই বাংলাদেশ ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করছেন। এবার মমতার দলের জেলা পর্যায়ের এক মুসলিম নেতা বাংলাদেশ নিয়ে বিতর্কিত এসব মন্তব্য করেছেন।

একই দিনে (বুধবার) মমতা বন্দোপাধ্যায় কলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বিতর্কিত এই আবদার জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্রকে অবশ্যই সহিংসতা-বিধ্বস্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে হবে এবং যারা ফিরতে ইচ্ছুক তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।

তবে বাংলাদেশ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের অনেকেই সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেছেন মমতা। পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কিছু অংশ সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুয়া ভিডিও প্রচার করছে।

কয়েকদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেক ধর্ম ও বর্ণের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন। এই বিষয়ে ভারতের সংসদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিংবা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কাছ থেকে বিবৃতিও দাবি করেছিলেন তিনি।

মমতার এমন উদ্ভট মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের বিরোধীদল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য শশী থারুর বলেছিলেন, মমতা শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা পুরোপুরি বোঝেন কি না তা ‘নিশ্চিত’ নন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা শুভেন্দু অধিকারীও বাংলাদেশকে নিয়ে একের পর এক মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করছেন। মঙ্গলবার বিজেপির এই নেতা বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে হাস্যকর এক বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আমার কাছে খবর আছে, কলকাতা দখল করার জন্য ঢাকা থেকে ৩ লাখ হাতে টানা রিকশা রওনা দিয়েছে। যদিও বাংলাদেশে হাতে টানা রিকশার অস্তিত্ব নেই।

ট্যাগস :

মাত্র ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ দখলের হুমকি

আপডেট সময় : ০২:২৩:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিম নাগরিকদের নিয়ে মাত্র ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ দখলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন রাজ্যের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি টিংকুর রহমান বিশ্বাস এই হুমকি দিয়েছেন। তার এই হুমকির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু মুসলিম সেলের সভাপতি টিংকুর রহমান বিশ্বাস বলেন, গতকালও আমাদের চোখে পড়েছে বিএনপি নেতা আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যঙ্গ করছিলেন। এখানে সংখ্যালঘু মুসলিম যারা আছি আমাদের জন্যই যথেষ্ট বাংলাদেশ। আমি কালকেও বলেছি, বর্ডার খুলি দিন ১৫ মিনিটের জন্য, বাংলাদেশ দখল করে নেব। পুলিশ লাগবে না, ফোর্সও লাগবে না।

তিনি বলেন, যে নিজের জাতির পিতাকে চেনে না, মূর্তি ভাঙে তাদের কাছ থেকে আর কী আশা করতে পারি। ১৫ মিনিটের জন্য খুলে দিক বর্ডার, পুলিশ লাগবে না; আমরা যারা সংখ্যালঘু মুসলিম আছি পশ্চিমবঙ্গে আমাদেরই যথেষ্ট দখল করা বাংলাদেশ।

ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করে তৃণমূলের এই নেতা আরও বলেন, গোটা ভারতবর্ষ লাগবে না, আমরা ৩২ কোটি মুসলমান থাকি ভারতবর্ষে। এতো জনও লাগবে না। আমরা পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরাই দখল করে নিতে পারবো।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়নের অভিযোগের ঘটনায় প্রতিবেশী ভারতের রাজনীতিকদের বিতর্কিত মন্তব্য থামছেই না। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও বিরোধীদল বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রায় প্রত্যেকদিনই বাংলাদেশ ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করছেন। এবার মমতার দলের জেলা পর্যায়ের এক মুসলিম নেতা বাংলাদেশ নিয়ে বিতর্কিত এসব মন্তব্য করেছেন।

একই দিনে (বুধবার) মমতা বন্দোপাধ্যায় কলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বিতর্কিত এই আবদার জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্রকে অবশ্যই সহিংসতা-বিধ্বস্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে হবে এবং যারা ফিরতে ইচ্ছুক তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।

তবে বাংলাদেশ ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গের অনেকেই সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেছেন মমতা। পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কিছু অংশ সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুয়া ভিডিও প্রচার করছে।

কয়েকদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেক ধর্ম ও বর্ণের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন। এই বিষয়ে ভারতের সংসদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিংবা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের কাছ থেকে বিবৃতিও দাবি করেছিলেন তিনি।

মমতার এমন উদ্ভট মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের বিরোধীদল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য শশী থারুর বলেছিলেন, মমতা শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা পুরোপুরি বোঝেন কি না তা ‘নিশ্চিত’ নন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা শুভেন্দু অধিকারীও বাংলাদেশকে নিয়ে একের পর এক মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করছেন। মঙ্গলবার বিজেপির এই নেতা বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে হাস্যকর এক বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আমার কাছে খবর আছে, কলকাতা দখল করার জন্য ঢাকা থেকে ৩ লাখ হাতে টানা রিকশা রওনা দিয়েছে। যদিও বাংলাদেশে হাতে টানা রিকশার অস্তিত্ব নেই।