DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাবুধবার ৯ই জুলাই ২০২৫
ঢাকাবুধবার ৯ই জুলাই ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

মিলছেনা সাহায্য, অনাহারে প্রতিবন্ধী পরিবার

DoinikAstha
এপ্রিল ১৭, ২০২১ ৩:৩৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রিয়াজুল হক সাগর: রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

মোন্নাফ আলী (৫৮) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক হিসেবে পরিচিত এলাকায়। তার ভিক্ষার টাকায় চলে পরিবারের ছয় সদস্যের সংসার। এদের মধ্যে আবার এক ছেলে ও এক মেয়ে তার মতোই জন্ম থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। মোন্নাফ আলী নিজে একে তো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তার উপর বয়সের কারণে আগের মতো চলাচল করতে পারেন না। তবুও পরিবারের সদস্যদের তিন বেলা আহার ও চিকিৎসা ব্যয় যোগাতে প্রতিদিন স্ত্রীর হাত ধরে ভিক্ষার জন্য রাস্তায় নামতে হয় তাকে। কিন্তু গত তিন দিন ধরে কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে পরিবারটি। ভিক্ষা করতে না পারায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তাদের।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের রহমত চর গ্রামের বাসিন্দা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক নামে পরিচিত মোন্নাফ আলীর(৫৮) সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, পরিবারের ৩ জন সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। তবে সেই টাকার চেয়েও বেশি টাকা খরচ হয় পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসায়। তাই খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে ভিক্ষার বিকল্প নেই তার। বাধ্য হয়েই স্ত্রীর হাত ধরে ভিক্ষার আশায় ঘোরেন তিনি।

তিনি আরো জানান, গত কয়েক দিন ধরে অলস সময় পার করছেন। একদিন ভিক্ষা না করলে অর্ধাহারে অনাহারে থাকতে হয় পরিবারের ছয় সদস্যকে। ফলে নিত্যদিনেই ভিক্ষা করতে হয় তাকে। মাঝে মাঝে বেশি ভিক্ষার আশায় মোন্নাফ আলী তার দৃষ্টি প্রতিবন্ধি মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে ভিক্ষায় বেরিয়ে পড়েন। লকডাউনের প্রথম দিনে পীরগাছা উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরেও তেমন আয় হয়নি। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন। ভিক্ষা করতে না পাড়ায় স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে তাদের।

বর্তমানে তার সংসারে স্ত্রী অমিলা বেগমসহ চার সন্তান রবিউল ইসলাম (২৬), আমেনা খাতুন (১৬), জামেলা খাতুন (১৫) ও রেজাউল ইসলাম (১২)। এদের মধ্যে জন্ম থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আমিনা খাতুন ও রেজাউল ইসলাম বলেন, বাবা তো হাঁটতে পারে না। তাই আমরাও মাঝে মাঝে বাবার সাথে ভিক্ষা করতে যাই। অনেক সময় আমরা না খেয়ে থাকি। কেউ আমাদেরকে সহযোগিতা করে না।

ক্ষুধার যন্ত্রণায় অন্ধ দুই সন্তানসহ স্ত্রী ও শারীরিকভাবে অসুস্থ সন্তানরা মোন্নাফ আলীকে ভিক্ষার জন্য বাইরে বের হতে কাকুতি মিনতি করেন। কিন্তু বাইরে তেমন লোকজন নেই এবং আইনশৃঙ্খলার ভয়ে বাইরে বের হতে পারছেন না মোন্নাফ আলী। এছাড়া তার শরীরে বার্ধক্যের ছাপ পড়ায় বেশি সময় হাঁটতেও পারেন না তিনি।

উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহেব উদ্দিন জানান, প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ায় তাদেরকে আর কোনো সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি।

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামসুল আরেফীন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
[prayer_time]