ধর্ষণবিরোধী এক বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশের নারী সমাজের প্রতি কটাক্ষ করা বা খারাপ চোখে তাকানোর মতো একটি কর্মীও ছাত্রলীগে নেই। এমসি কলেজ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃত্বেই ধর্ষণের প্রতিবাদে প্রথম আন্দোলন হয়েছে, এই ঘটনার বিচারের জন্য সিলেটে ছাত্রলীগ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করছে, তারাই ছাত্রলীগের কর্মী; যারা ধর্ষণ করে, তারা ছাত্রলীগের কেউ নয়। ছাত্রলীগ আছে বলেই স্বাধীনতাবিরোধীরা গলা উঁচু করে কথা বলতে পারে না।’
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণ, নিপীড়ন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদের এবং সিলেটের এমসি কলেজ, খাগড়াছড়ি ও সাভারে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত সবার গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিতের দাবিতে’ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। আজ রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
নুরুলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন ও বিচারব্যবস্থা এতটা সস্তা হয়ে যায়নি যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীকে ধর্ষণের পর আন্দোলন করে আপনারা পার পেয়ে যাবেন। আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্রলীগের একজন আদর্শিক কর্মী কোথাও উপস্থিত থাকলে সেখানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে পারে না।’
নেতাকর্মীরা প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভালোবাসার ব্যারিকেড গড়ে তুলবে :ঢাবির ছাত্রলীগ
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যান, তখনই ধর্ষণের মেগা সিরিয়াল দেখা যায়। আমি হতবাক—পরপর কীভাবে ধর্ষণগুলো ঘটে? আমার তো ধারণা হয়, নুরুলেরা বাঁচার তাগিদে পরিকল্পনামাফিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়ে ছাত্রলীগকে দায়ী করতে চায়। পাগল ও বিকারগ্রস্ত ভিপি নুরুল, আপনাকে বলতে চাই, বোনদের সহানুভূতি নিয়েই আপনি ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন, এটি যদি মনে রাখতেন, তাহলে সবার আগে আপনিই এই বোনটির পাশে দাঁড়াতেন। আপনি বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াচ্ছেন, আমি নাকি আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। আমি বলতে চাই, এটি কোনো ষড়যন্ত্র নয়, এই বোনটির পক্ষে মামলা করতে পারলে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করতাম। আমরা ধর্ষকের বিচার চাই, কোনো সংগঠনের নয়।’
আইনজীবী কামাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে সনজিত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তাদের যেখানেই দেখবেন, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান রইল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণগুলোর বিচার না হলে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশ অচল করে দেব।’
বিক্ষোভ সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সদ্য সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড চাই—শুধু এটুকু বলেই আত্মতৃপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই।
বরং নারীর ওপর অপরাধের শর্ত তৈরি করে যে সমাজ, সেই সমাজকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে হবে।’ নুরুলকে ‘ডাকসুর সাবেক নাট্যকার’ আখ্যায়িত করে সাদ্দাম বলেন, ‘গণমাধ্যমের বন্ধুদের বলব, আপনারা সিলেকটিভ নৈতিকতা না দেখিয়ে নৈর্ব্যক্তিক নৈতিকতা দেখান। সবার ব্যাপারেই যেন আপনাদের সমান চোখ থাকে। সিলেটের এমসি কলেজের ঘটনা পত্রিকায় লিড হবে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হবে, তা হতে পারে না। বিশেষ করে ডাকসুর সাবেক নাট্যকারের বক্তব্য-কর্মসূচিগুলোর ডেবিট-ক্রেডিট মিলছে না, ব্যালেন্সশিট সমান থাকছে না—গণমাধ্যমের বন্ধুরা বিষয়টি উপস্থাপন করুন।’