বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা হবে আজ। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন।
মামলার রায়ে রিফাতের স্ত্রী মামলার অন্যতম আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বেকসুর খালাস পাবে বলে প্রত্যাশা বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের। একই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, আমার মেয়ে নিরাপরাধী। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সারা দেশের মানুষ দেখেছে আমার মেয়ে কিভাবে সন্ত্রাসীদের ধারালো রামদার সামনে গিয়ে নিজের স্বামীকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছে। মিন্নি যেভাবে রিফাতকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে সেটা যদি খুন করতে চাইতো তাহলে কখনোই করতো না।
তিনি আরো বলেন, আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমার প্রত্যাশা বিচারক এ মামলায় মিন্নিকে খালাস দেবেন।
অন্যদিকে নিহত রিফাত শরীফের বাবা ও মিন্নির শ্বশুর আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ বলেন, মিন্নি এ মামলার মূল পরিকল্পনাকারী। মিন্নির জন্যই আজ আমি সন্তানহারা। মিন্নি আমার ছেলেকে বিয়ে করেও নয়ন বন্ডের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রেখেছিলো। আর সেই অবৈধ সম্পর্কের বলি হতে হলো আমার ছেলেকে। আমি এই ষড়যন্ত্রকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি যাতে আর কোনো বাবার বুক অকালে শূন্য হয়ে না যায়।
তিনি আরো বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ের আগে মিন্নি নয়ন বন্ডকে বিয়ে করেছিলো। সেসব তথ্য গোপন করে আমার ছেলেকে বিয়ে করে। মিন্নি আমার ছেলেকে বিয়ের পরও নয়ন বন্ডের সঙ্গে পরকীয়া চালিয়ে যায়। ওর জন্য আজ কতোগুলো পরিবার ব্যাথার সাগরে ভাসছে। ওর শাস্তি এখন বরগুনাবাসীর দাবি।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত করে। এরপর বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে তারা। গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওইদিনই মারা যান।
ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। একইসঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ৮ জানুয়ারি একই মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনার শিশু আদালত।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক রয়েছেন। এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ অপ্রাপ্তবয়স্ক ৮ আসামি উচ্চ আদালত ও বরগুনার শিশু আদালতের আদেশে জামিনে রয়েছে।