শব্দদূষণে অতিষ্ঠ খাগড়াছড়ি শহরবাসি
মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াছঃ
খাগড়াছড়িতে হাইড্রোলিক হর্নের যথেচ্ছ ব্যবহার, যত্রতত্র মাইক বাজানো এবং নির্মাণকাজের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে শহরে বসবাসকারীরা । শব্দদূষণের প্রভাবে বৃদ্ধ ও শিশুদের হৃদ্রোগ ও শ্রুতিহীনতার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
যানবাহনের হর্ন, সভা-সমাবেশের মাইক, যত্রতত্র কারণে-অকারণে মাইকিং, নির্মাণকাজজনিত শব্দে এই দূষণ বাড়ছে। এ-সংক্রান্ত আইন থাকলেও তা কেউ মানছে না। এ ব্যাপারে ব্যবস্থাও নেওয়া হয় না বললেই চলে।
সড়কে বের হলে শুনতে হয় বাস-ট্রাকের মাত্রাতিরিক্ত হর্ন। বাসায় বৃদ্ধ অথবা রোগী থাকলে তাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে ওঠে।
বিধিমালায় শব্দের মানমাত্রা অতিক্রম না করার শর্তে মাইক, এমপ্লিফায়ার ব্যবহার করতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার বিধানও আছে। তবে এলাকা বাসির অভিযোগ, মাইকিংয়ের ক্ষেত্রে এ বিধান মানা হয় না। বিধান মানা না হলেও প্রশাসন আইনের প্রয়োগ করে না।
দীর্ঘ সময় ধরে এভাবে মাইকিং করতে এখন আর দরকার পড়ে না ঘোষকের। ঘোষণাটি একবার রেকর্ড করে মোবাইলের মেমোরি কার্ডে নিয়ে রিকশায় অথবা ইজিবাইকে মাইক বেঁধে চলতে থাকে দিনভর বিরতিহীন ঘোষণা।
উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস, বধিরতা, হৃদরোগ, আলসার, বিরক্তি সৃষ্টি হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হন শিশু এবং বয়স্করা। শব্দদূষণে তিন বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের মানসিক বিকাশের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমনকি গর্ভে থাকা সন্তানও শব্দদূষণে ক্ষতির শিকার হয়, অর্থাৎ তাদের শ্রবণশক্তি খুব দ্রত নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া শব্দ দূষণের ফলে সড়কে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। কারণ শব্দ দূষণে মেজাজ খিটখিটে হয়, মনোযোগ নষ্ট হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। ঘুমের ব্যাঘাতের কারণে দুশ্চিন্তা, উচ্চরক্তচাপসহ নানা সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজের পাশে জোরে হর্ন বাজানো এবং মাইক বাজানো হচ্ছে। হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ যেসব স্থানে মাইক বন্ধ রাখার নিয়ম রয়েছে, তাও মানছে না কেউ।
তা ছাড়া পরিবেশ আইন অনুযায়ী যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন লাগানো নিষেধ হলেও এখনো ট্রাক, বাসে এসব হর্নের ব্যবহার রয়ে গেছে। এই আইনের যথাযথ ব্যবহার নেই বলে অভিযোগ।
ট্রাফিকপুলিশ হাইড্রোলিক হর্নের বিরুদ্ধে অভিযান চালালে অনেকটা স্বস্তি পেত শহরবাসী।