DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাবৃহস্পতিবার ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৪
ঢাকাবৃহস্পতিবার ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

অনলাইন ক্যাসিনোতে মদদ জোগাচ্ছে বারিশ হক

Doinik Astha
অক্টোবর ১০, ২০২৩ ৫:২৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চড়েন দামি গাড়িতে, পরিধান করেন দামি পোশাক, বিলাসবহুল চলাফেরা। পেশাগত পরিচয় ব্র্যান্ড প্রমোটার, ফেসবুক লাইভ প্রেজেন্টার, নৃত্যশিল্পী, মডেল ইত্যাদি। তবে এসবের পাশাপাশি করেন অনলাইন বেটিং বা ক্যাসিনো সাইটের প্রচার ও প্রচারণা। বলা হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার বারিশ হকের কথা। তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে প্রকাশিত একাধিক ভিডিওতে অনলাইন বেটিং ও ক্যাসিনো সাইটের প্রচারণা করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া বেটিং সাইটের লিঙ্ক কমেন্ট বক্সে দিয়েও সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের প্রলুব্ধ করছেন। যদিও এগুলোকে বেটিং বা ক্যাসিনো সাইট হিসেবে মানতে নারাজ তিনি।

বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রচার ও প্রচারণা তথা ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বেশ উপযুক্ত। এ মাধ্যমে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং পদ্ধতিতে ব্র্যান্ডগুলো দ্রুত বৃহৎ পরিসরে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেন। সেখানে ব্র্যান্ড প্রমোটর হিসেবে কাজ করেন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা। এখানে যার ফ্যান-ফলোয়ার বেশি, যার ভিডিও বেশি দেখা হয়, তার কদর তত বেশি।

জানা গেছে, ইউটিউব, ফেসবুক এবং টিকটকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে যারা কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করেন, তারা হরহামেশাই বেটিং সাইটের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পান। বেটিং সাইটের প্রমোশনের বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থের প্রলোভন দেন বুকি এবং এজেন্টরা। এমনই একজন হলেন বারিশ হক। তিনি বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রমোশনের কাজ করেন।

একটি সূত্রের দাবি, জুয়ার সাইটের যে ধরনের প্রমোশন বারিশ হক করেন তার জন্য প্রতি ভিডিওতে তিনি লক্ষাধিক টাকা নিয়ে থাকেন।

বারিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে অন্তত ১২ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। এ পেইজ থেকে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও লাখ লাখ বার দেখা হয়। মুহূর্তেই সেগুলো ছড়িয়ে পড়ে কোটি ইন্টারনেরট ব্যবহারকারীর কাছে। একাধিক ভিডিওতে বারিশ অনলাইন বেটিং ও ক্যাসিনো সাইটের প্রচারণা চালাতে দেখা যায়। ‘সিটিবিডি২০ ডট কম’ নামে ওই সাইটটির ছবি নিজের ভিডিওতে ব্যবহার করেন তিনি। এরপর সাইটটির ফেসবুক পেইজে যেতে কমেন্ট বক্সে লিঙ্ক দেন।

গত ১৫ আগস্ট রাত সোয়া ১২টায় ছাড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ওই জুয়ার সাইটটির প্রমোশন করছেন বারিশ। ভিডিওতে দুই দফা সেই সাইটের ছবি তুলে ধরা হয়। প্রথমবার ভিডিওর ৪০তম সেকেন্ডে এবং পরবর্তী সময়ে ১ মিনিট ৪০তম সেকেন্ডে সাইটটির প্রমোশন করেন তিনি। ছবি প্রকাশের পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওই সাইট দ্রুত ডাউনলোডের আহ্বান জানান তিনি। এখানে টাকা দিয়ে গেম খেললে যে অর্থ হারানোর বিষয়টি জেনেও সাইটটির প্রমোশন করেন বারিশ। ভিডিওটি অদ্যাবধি প্রায় ১০ লাখ বার দেখেছেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা।

ভিডিওতে প্রথম দফায় তিনি বলেন, তোমরা যারা ঘরে বসে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা আয় করতে চাও, তারা সিটিবিডি২০ ডট কমে যোগাযোগ করতে পার। কীভাবে টাকা দেবে বা উত্তোলন করবে, সেগুলোর বিস্তারিত এ ভিডিওর কমেন্ট বক্সে দেওয়া থাকবে। একই ভিডিওতে দ্বিতীয়বার বলেন, যারা এখনো সিটিবিডি২০ ডট কম ডাউনলোড করোনি, তারা দ্রুত ডাউনলোড করো। কারণ, অনেকেই এখান থেকে মাসে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারে। আর ডিপোজিট মানি (জমা দেওয়া অর্থ) অনেক সময় ফিরে পাওয়া যায় না, কারণ গেমে হেরে যায় অনেকে। এটা পুরোপুরি ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে।

একই সাইটের প্রমোশন করে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ১টায় ফের ভিডিও প্রকাশ করেন বারিশ। এ ভিডিওটিও দেখা হয় সাড়ে ৫ লাখের বেশিবার। ভিডিওর ৪৯তম সেকেন্ডে সাইটটির প্রমোশন শুরু করেন। ৫৬তম সেকেন্ডের সময় বলেন, অনেকেই বলো যে, টাকা ডিপোজিট (জমা) করে পাচ্ছ না। আসলে যারা ডিপোজিট করে রিটার্ন (উত্তোলন) পায় না, তারা আসলে উইন (জয়) করতে পারও না। উইন করতে পারে—এমন অনেক রিয়েল কাস্টমার (আসল গ্রাহক) আছে। তোমরা সেই প্রুফগুলো (প্রমাণ) কমেন্ট বক্সে পেয়ে যাবে। এ ভিডিওর কমেন্ট বক্সে একটা লিঙ্ক দেওয়া আছে, যেখানে তোমরা ডিটেইলস (বিস্তারিত) পাবে। কীভাবে টাকা ডিপোজিট করা যাবে, কারা কারা টাকা পেয়েছে, কারা কারা পায়নি; সবকিছু এখানে জানতে পারবে।

এটা যে একটা বেটিং সাইট এবং এখানে বিনিয়োগকৃত অর্থ হারানোর ঝুঁকি আছে, তা জেনেও এর প্রমোশন করছেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে দাবি করেন, এগুলো বেটিং সাইট না, অনলাইন গেমিং।

তবে সাইটটি যে বেটিং ও ক্যাসিনোর, তা কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন একাধিক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেন, এটা সম্পূর্ণ জুয়ার সাইট। এ সাইট থেকে টাকা কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে, আমরা জানি না। আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত আইন অনুযায়ী এখানকার লেনদেন অবৈধ। মূলত এসব সাইটের মাধ্যমে সংগৃহীত টাকা দেশের বাইরে পাচার করা হয়। এখানে টাকা দিয়ে খেলতে হয়। আপনি জিততেও পারেন, হারতেও পারেন। যেহেতু এটা কোনো টুর্নামেন্টের এন্ট্রি ফি না, তাই টাকা দিয়ে যাই খেলা হবে, সেটাই জুয়া বা ক্যাসিনো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অনেক ফ্যান ফলোয়ার আছে। তাদের এ ধরনের প্রচারণায় সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যারা এসব সাইটের প্রচারণা করছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:১৭
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:২২
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:১২
  • ১২:০২
  • ৩:৪২
  • ৫:২২
  • ৬:৪১
  • ৬:৩৮