কুয়েতে নিজ বাসায় জোড়া হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক মাস পর ঢাকার ধামরাইয়ে পৌঁছেছে মমতা বেগম (৫৬) ও তার মেয়ে স্বর্ণলতার (৩১) লাশ। ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আজ বুধবার সকালে কাতার এয়ারওয়েজের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মমতা ও তার মেয়ের লাশ পৌঁছায়। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্স যোগে তাদের লাশ ধামরাই পৌর এলাকার তালতলায় নেওয়া হয়।
এ সময় স্বজনদের আহাজারি ও আর্তনাদে হৃদয় বিদারক পরিবেশ তৈরি হয়। পরে আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে লাশ দাফনের জন্যে গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে নেওয়া হয়। মমতা বেগম ধামরাইয়ের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান শিকদারের স্ত্রী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাগ্য অন্বেষণে দুই দশক আগে কুয়েতে পাড়ি জমান মমতা বেগম। দুই বছর আগে একমাত্র মেয়ে স্বর্ণলতাকেও কুয়েতে নিয়ে বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি দেন তিনি। গত ২৫ আগস্ট কুয়েতের আল সুখা এলাকার একটি বহুতল ভবনের নিচতলার ফ্ল্যাটে খুন হন মমতা ও স্বর্ণলতা।
কুয়েত পুলিশের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, নির্জন ওই ফ্ল্যাটে মা ও মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা করা হয়। স্থানীয় পুলিশ তাদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে একটি মামলা রেকর্ড করলেও এখন পর্যন্ত এ ঘটনার কারণ উদঘাটন কিংবা জড়িতদের কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি।
গাইবান্ধায় ভবন ভাঙ্গার কাজ করতে গিয়ে নির্মাণ শ্রমিকসহ দুইজন নিহত
এদিকে রহস্যজনক এই হত্যাকাণ্ডের চার দিনের মাথায় আইপি টেলিফোন ব্যবহার করে ধামরাইতে বসবাসরত পরিবারের একমাত্র সদস্য মমতা বেগমের ছেলে এজাজ আহমেদকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এজাজ জানান, তিনি তার মা ও বোনের হত্যাকাণ্ডের খবর পান ২৮ আগস্ট। সেই শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে মুঠোফোনে দুর্বৃত্তদের হুমকির মুখে পড়েন তিনি।
তিনি আরও জানান, ইন্টারনেটের মাধ্যমে এজাজের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করে তাকে হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত ৩১ আগস্ট দুপুরে ধামরাই থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরিও করেন এজাজ।