অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে সরকারী বিদ্যালয় ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম
রিয়াজুল হক সাগর রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃরংপুরের মিঠাপুকুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে বলদীপুকুর ব্যাপ্টিস্ট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।স্থানীয়দের তীব্র প্রতিবাদের মুখেও বন্ধ হয়নি অবৈধ বালু উত্তোলন।
স্থান বদল করে চলছে বালু উত্তোলনের কর্মযজ্ঞ।মুলত,ওই এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে অবৈধ বালু উত্তোলনের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।প্রশাসন কয়েক বার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছেন তারা।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের বলদীপুকুর ব্যাপ্টিস্ট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেছে রাফা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।ওই প্রতিষ্ঠানের হয়ে স্থানীয়ভাবে কাজকর্ম দেখভাল করেন আবু সাইদ ও রওশন মিয়া।তারা ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গভীরভাবে খাদ করে বালু উত্তোলন শেষ করে,বলদীপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ফসলী জমি হতে পুনরায় উত্তোলন শুরু করেছেন।স্থানীয়রা বাধা দিলেও কোন তোয়াক্কা করছেন না প্রভাবশালীরা।
অপরদিকে,মোলং বাজারের পাশে হাবিবপুর গ্রামে আব্দুল হাকিম মিয়ার জমি হতে বালু উত্তোলন শুরু করেছেন বলদীপুকুর কোনাপাড়া গ্রামের মশিউর রহমান।সেখানে স্কেবেটর মেশিন দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন করছেন তিনি।প্রভাবশালীদের সিন্ডিকেটের মুখে প্রতিবাদ করেও কাজ হচ্ছেনা বলে জানান এলাকাবাসী।স্থানীয়রা জানান,দির্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে বলদীপুকুর ব্যাপ্টিস্ট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি।এখন স্থান পরিবর্তন করে বলদীপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে মমিনপুর গ্রামে ফসলী জমি হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এর ফলে বলদীপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকসহ আশপাশের বাড়িঘর ভাঙ্গনের চরম হুমকির মুখে পড়েছে।বালু পরিবহনের কাজে ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তাঘাট ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।এর প্রতিবাদ করেও থামানো যাচ্ছেনা বালু উত্তোলনকারীদের।ফলে রক্ষা করা যাচ্ছেনা ফসলী জমিসহ ঘরবাড়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো।হাবিবপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন,মোলং বাজারের উত্তর পাশে হাবিবপুর গ্রামে কয়েকদিন ধরে শুরু হয়েছে বালু উত্তোলন।একটি প্রভাবশালী চক্র ওই বালুগুলো উত্তোলন করছেন।
প্রশাসন এ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।রাণীপুকুর বিট পুলিশিংয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন,১০ চাকার ড্রাম দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাচ্ছে।এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি ট্রাকগুলো আটক করেছিলাম।কিন্তু,রাণীপুকুর ভূমি কার্যালয়ের অসহযোগীতার কারণে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।রাণীপুকুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার রায় বলেন,ইতোপূর্বে ওই স্থানে এসিল্যান্ড স্যার ভ্রাম্যমান আদালত চালিয়েছিলেন।
কিন্তু,এরপরও তারা বালু উত্তোলন করছে বলে শুনেছি।বলদীপুকুর ব্যাপ্টিস্ট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বলদীপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে অবৈধ বালু উত্তোলকারী আবু সাইদ বলেন,ইমারী বিদ্যালয়ের পাশ হতে আর বালু উত্তোলন করা হচ্ছে না।মাঝে মাঝে বলদীপুকুর বিদ্যালয়ের পাশ হতে উত্তোলন করা হচ্ছে।মোলং হাবিবপুর এলাকার অবৈধ বালু উত্তোলনকারী মশিউর রহমান বলেন,ওই এলাকায় আগে বালু উত্তোলন করেছিল।
এরফলে,জমিটাতে ফসল চাষ হচ্ছেনা,তাই বালু উত্তোলন করার জন্য স্কেবেটর মেশিন নিয়ে আসা হয়েছে।কিন্তু,এখনও শুরু হয়নি,কেবল রাস্তা ঠিক করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন ভূঁইয়া বলেন,এলাকাবাসী এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ করেনি।স্থানীয়ভাবে তারা বাধাও দেয়না।তবে,বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।