অভয়নগরে হত্যাকাণ্ড-ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ২
জেলা প্রতিনিধিঃ যশোরের অভয়নগরে দেবাশীষ সরকার সঞ্জয় নামের এক ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড ও তার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।শুক্রবার (২১ মে) তারা যশোরের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেফতাররা হলেন, খুলনার তেরখাদার মোকামপুর গ্রামের মোতালেব খাঁ ওরফে মোতাহের খাঁর ছেলে সেলিম খাঁ ওরফে শহিদুল ও দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনী মহল গ্রামের মুক্তার শেখের ছেলে নান্টু শেখ।
যশোর পিবিআই’র পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, গত ২৬ এপ্রিল রাত আড়াইটায় একদল ডাকাত যশোরের অভয়নগরের চলিশিয়া গ্রামের পালপাড়ার দেবাশীষ সরকার ওরফে সঞ্জয় সরকারের বাড়িতে হানা দেন।
প্রথমেই ডাকাতরা বাড়ির মালিক সঞ্জয় সরকার ও তার স্ত্রী রিপা সরকার, মেয়ে দেবীকা ও মা মিনতী সরকারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর করা শুরু করেন। এরপর বাড়ি থেকে চার লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যান।
তারা চলে যাওয়ার পরে বাড়ির লোকজনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সঞ্জয় সরকারকে মৃত ঘোষণা করেন। সঞ্জয়ের স্ত্রী রিপা সরকারের অবস্থা খারাপ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনায় পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় সঞ্জয়ের ভগ্নিপতি অ্যাডভোকেট তপন কুমার বিশ্বাস মামলা করেন। মামলাটি তদন্তভার গ্রহণ করে যশোর পিবিআই।
পিবিআই যশোরের পুলিশ পরিদর্শক দেবাশীষ মণ্ডল তদন্তকালে গত ১৯ মে রাত আড়াইটায় খুলনার তেরখাদার মোকামপুর গ্রামের বাড়ি থেকে আসামি সেলিম খাঁ ওরফে শহিদুলকে গ্রেফতার করেন। এসময় তার কাছ থেকে ডাকাতি করা একটি স্বর্ণের আংটি জব্দ করা হয়।
এরপর ২০ মে সকাল সাড়ে ৮টায় দিঘলিয়ার চন্দনী মহলের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অপর আসামি নান্টু মিয়াকে। গ্রেফতার দু’জনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে খুলনার হেলাতলা রিংকু স্টোরে অভিযান চালানো হয়। এসময় ওই দোকান থেকে ডাকাতি করা ছয় ভরি সাত আনা স্বর্ণ জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা পিবিআইকে জানিয়েছে, আসামি সেলিম খাঁ তার দলবল নিয়ে দেবাশীষ সরকার সঞ্জয়ের বাড়িতে ডাকাতি করতে যান। বাড়ির সদস্যদের লোহার রড দিয়ে জখম করে বাড়িতে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থসহ ১৯ লাখ টাকার মালামাল ডাকাতি করেন। এরপরএ স্বর্ণালঙ্কার নান্টু শেখের মাধ্যমে বিক্রি করে দেন।
গ্রেফতার দু’জনকে শুক্রবার যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। তারা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চতুর্থ আদালতের বিচারক মাহাদী হাসানের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।