কুমিল্লার সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দিনের বেলায় কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দলিল ঘষামাজা করার অভিযোগ উঠেছে। দুঃসাহসিক এই কর্মকাণ্ডের ঘটনায় ১৩ দিন পর কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় আবুল বাসার সাজ্জাদ (৪০) নামে এক দলিল লেখকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি মো. আনোয়ারুল হক। বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) রাতে সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আবদুস ছামাদ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
কুমিল্লার সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দিনের বেলায় কর্মচারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দলিল ঘষামাজা করার অভিযোগ উঠেছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ অক্টোবর শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। দুপুর ২টার দিকে কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন অফিস সহকারী মো. আবদুস ছামাদ। তার সঙ্গে ছিলেন মোহরাব মো. আজাদ ও পিয়ন আবদুল জলিল। এ সময় দলিল লেখক মো. আবুল বাসার সাজ্জাদ ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন ব্যক্তি তাদের দিকে অস্ত্র তাক করেন। ওই সময় তারা মো. আবদুস ছামাদের কাছে থাকা রেকর্ড কক্ষের চাবি কেড়ে নেন। এরপর দ্রুত রেকর্ড কক্ষের দরজার তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন। ওই সময় অফিস সহকারী ওই কক্ষের দিকে এগোতে গেলে তাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। একই সঙ্গে পিস্তল তাক করা হয়। এরই ফাঁকে দলিল লেখক মো. আবুল বাসার সাজ্জাদ একটি দলিল নিয়ে রেকর্ড কক্ষ থেকে রেজিস্ট্রি অফিসের বাইরে যান। কিছুক্ষণ বাইরে থাকার পর সাজ্জাদ পুনরায় দলিল নিয়ে এসে পিয়ন জলিলের হাতে তুলে দেন। একই সঙ্গে ওই ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হত্যা ও চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়ে যান।
সুন্দরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েএকই পরিবারে তিন জনের মৃত্যু
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, এরপর রেখে যাওয়া ওই দলিল খুলে দেখা যায়, দলিল লেখক সাজ্জাদ যে দলিল নিয়ে বাইরে যান, সেটি একটি আমমোক্তারনামা দলিল, যা গত ১৩ অক্টোবর নিবন্ধন করা হয়। এতে দলিলের প্রকৃতি পরিবর্তনসহ ৯ নম্বর পাতার বিভিন্ন বিষয় সংযুক্ত করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিবন্ধনের মহাপরিদর্শক ও সহকারী পরিদর্শককে জানানো হয়। এরপর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে মামলা হয়।
মামলার বাদী মো. আবদুস ছামাদ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে এই মামলার বাদী করা হয়েছে। এজাহারে তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে দলিল লেখক মো. আবুল বাসার সাজ্জাদের মোবাইল ফোনে বন্ধ পাওয়া যায়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. আনোয়ারুল হক বলেন, অস্ত্র দিয়ে দলিল ছিনিয়ে নেওয়া এবং ঘষামাজার অভিযোগে একজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মামলার অপর আসামিরা অজ্ঞাতনামা। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।