শিগগিরই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল শুনানি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছিলেন আইভী রহমান।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বনানীতে আইভী রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, মানব সভ্যতার ইতিহাস নৃশংসতম ঘটনা। একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় অংশ, ৭৫ এর ভুলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে গ্রেনেড হয়ে ফিরে আসে। এর প্রধান লক্ষ্য ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশ করতে গিয়ে আমাদের নেত্রী সেদিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের টার্গেট হন।
এর আগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে আইভী রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ওবায়দুল কাদের। এছাড়া আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় আইভী রহমানের পরিবারের সদস্যরাও বনানী কবরস্থানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। এরপর ২৪ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান আইভি রহমান।
দিনটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ঢাকার গুলশানে জিল্লুর রহমানের বাসায় এক মিলাদ দোয়া ও কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগ কোরআন খতম, দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষে দুপুরে ভৈরব কেবি পাইলট মডেল হাইস্কুলে আলোচনা ও তবারক বিতরণ করা হবে।
আইভি রহমানের পৈতৃক বাড়ি ভৈরব শহরের চণ্ডিবের এলাকায় তার পরিবারের পক্ষ থেকেও মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ছিলেন আইভি রহমান। তার একমাত্র ছেলে বিসিবি সভাপতি ও সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন এবং মেয়ে তানিয়া ও ময়না। পারিবারিকভাবে আইভি রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নিকটাত্মীয়। তার বড় বোন সামসুন্নাহার সিদ্দিকা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার শাশুড়ি। এছাড়াও আইভি রহমানের বিয়ের সাক্ষী ছিলেন বঙ্গবন্ধু।
আইভি রহমান ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই ভৈরব শহরের চণ্ডিবের এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার নাম জেবুন্নেছা আইভি। ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে ভৈরবের জিল্লুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তার নামের সঙ্গে যুক্ত করেন রহমান। তার বাবা জালাল উদ্দিন ছিলেন তৎকালীন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ। মা হাসিনা বেগম ছিলেন গৃহিণী। ৮ বোন ৪ ভাইয়ের মধ্য আইভি রহমান ছিলেন পঞ্চম। ১৯৭১ সালে আইভি রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৫ সালে তিনি মহিলা আওয়ামী লীগ সদস্য এবং ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন।