হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে দুইদিনের যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর শেষ দিন আজ বুধবার ১৬ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর মধ্যে ১০ জন ইসরায়েলি, বাকিরা বিদেশি নাগরিক। তবে দুই ইসরায়েলি-রাশিয়ান ও চারজন থাই নাগরিককে চুক্তির বাইরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিনিময়ে ইসরায়েল ৩০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সিএনএনকে বলেন, মুক্তি পাওয়া ১০ ইসরায়েলির মধ্যে একজন ডাচ দ্বৈত নাগরিক, তিনজন জার্মান দ্বৈত নাগরিক ও একজন আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক। এছাড়াও দুই রাশিয়ান নাগরিক ও চারজন থাই নাগরিককে চুক্তির কাঠামোর বাইরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েল ৩০ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে মুক্তি দেবে। এর মধ্যে ১৬ জন নাবালক ও ১৪ জন নারীকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে জানান আল-আনসারি।
রেড ক্রস এক্সে (সাবেক টুইটার) জানায়, ‘আজ ১৬ ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে সহায়তা করা হয়েছে। আমাদের টিম তাদের স্থানান্তর করে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে।’ বলে এতে বলা হয়।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরাতে বুধবার সিএনএন জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়া ১০ ইসরায়েলি ও চার থাই নাগরিক ইসরায়েলে পৌঁছেছে।
ফিলিস্তিনের সরকারি তথ্য দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে ৬ হাজার ১৫০ জন শিশু এবং ৪ হাজার নারী রয়েছেন। গাজায় এখনো প্রায় ৭ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৪ হাজার ৭০০ জনের বেশি।
এদিকে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে সরকারি তথ্যে বলা হয়েছে। হামাসের হাতে ইসরায়েলের ২৪০ জন জিম্মি হয়।
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। হামাসের এই হামলার জবাবে ওই দিনই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে সেই অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গত দেড় মাসে উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৫ হাজার ৫৩২ জনে। এই নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুদের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।
১৪ অক্টোবর প্রথম বার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করে রাশিয়া। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আপত্তির কারণে তা বাতিল হয়ে যায়।
তার দুই দিন পর ১৬ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় মানবিক বিরতির আহ্বানের প্রস্তাব উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র; কিন্তু রাশিয়া ও চীনের আপত্তির কারণে সেটিও বাতিল হয়ে যায়।
তবে নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন প্রস্তাব বাতিল হলেও গাজায় যুদ্ধবিরতি কিংবা মানবিক বিরতির পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ। সেই সঙ্গে এই যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে আসছিল কাতার ও মিসর।