ইঁদুর ধরার ফাঁদ! মানুষ মানুষের জন্য
এম এইচ ইলিয়াছঃ
একটি ইঁদুর এক চাষীর ঘরে বাসা বেঁধে ছিল। একদিন ইঁদুরটি দেখলো চাষী আর তার স্ত্রী থলে থেকে কিছু একটা বের করছেন। ইঁদুর ভাবলো থলের ভিতর নিশ্চয়ই কোনো খাবার আছে, তাই সে গুটি গুটি পায়ে এগুলো।
এগিয়ে দেখলো সেটা খাওয়ার কিছু নয়, সেটা ছিল একটা ইঁদুর ধরার ফাঁদ। ফাঁদ দেখে ইঁদুর পিছাতে থাকলো। ইঁদুরটি বাড়ির পিছনের খোপে থাকা পায়রাকে গিয়ে বলল-জানো আজ বাড়ির মালিক একটা ইঁদুর ধরার ফাঁদ এনেছে!
এটা শুনে পায়রা হাসতে থাকলো আর বলল-তাতে আমার কি? আমি কি ওই ফাঁদে পড়তে যাব না কি?নিরাশ হয়ে ইঁদুরটি মুরগীকে গিয়ে একই কথা বলল। মুরগী ইঁদুরকে হেয় করে বলল-যা ভাই, এটা আমার কোনো সমস্যা নয়।
ইঁদুরটি হাঁপাতে হাঁপাতে মাঠে গিয়ে ছাগলকে শোনালো। ছাগল শুনে হেসে লুটোপুটি খেতে থাকলো আর বললো-
এটা তোকে মামা ফাঁদ, আমিতো আর সেখানে আটকা পড়ে মরবো না, যা এখান থেকে! কেউ তার কথার গুরুত্ব দিলনা, তার সহযোগীতায় কেউ এগিয়ে এলোনা।
সেই দিন রাত্রে ‘ফটাস’ করে একটি শব্দ হলো, ফাঁদে একটি বিষাক্ত সাপ আটকে গিয়েছিল। অন্ধকারে চাষীর স্ত্রী সাপের লেজকে ইঁদুর ভেবে বের করলো, আর সাপটি তাকে ছোবল মারল। অবস্থা বেগতিক দেখে চাষীটি ওঝাকে ডাকলো। ওঝা তাকে পায়রার মাংস খাওয়ানোর পরামর্শ দিল। পায়রাটি এখন রান্নার হাঁড়িতে।
চাষীর স্ত্রীর এই সংবাদ শুনে তার বাড়িতে আত্মীয় স্বজন এসে হাজির হল। তাদের খাওয়ার বন্দোবস্তের জন্য মুরগীকে কেটে ফেলা হল। মুরগী বেঁচারিও এখন রান্নার হাঁড়িতে।
দিন দুই পর চাষীর স্ত্রী মারা গেল। আর তার অন্তোষ্টিক্রিয়ার কিছু দিন পরে ছাগলটিকেও কেটে ফেলা হল। ছাগলও হাঁড়িতে রান্নার জন্য চলে গেল।
ইঁদুর তো আগেই পালিয়ে ছিল দুর, বহুদূর। কি শিক্ষা পেলাম আমরা? যদি কেউ আপনাকে তার সমস্যার কথা শোনায় আর আপনি ভাবেন যে এটাতো আমার সমস্যা নয়!
যার সমস্যা তার ব্যাপার! তবে একটু দাঁড়ান! আর একবার ভালো করে চিন্তা করুন, আপনার অবস্তাও কখনো এমন হতে পারে!?
মানুষ মাত্রই সমাজবদ্ধ জীব। সমাজের একটা অংশ, একটি ধাপ বা পর্যায়। একজন নাগরিক যদি বিপদে থাকেন তবে পুরো দেশ বিপদে পড়তে পারে! মনে রাখবেন, মানুষ মানুষের জন্য আর মানবতা সবার জন্য!