(শেখ সাগর আহমেদ, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি : ইলিশ ধরা ও বিপণন বন্ধের শেষ দিনে বাগেরহাটের সামুদ্রিক মাছ ক্রয়-বিক্রয়ের পাইকারি আড়ৎ কেবি বাজারে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) ভোর থেকে ক্রেতা-বিক্রেতা ও জেলেদের ভিড়ে সরগরম ছিল কেবি বাজার। ইলিশের দিকে আগ্রহ বেশি ছিল সবার। মাছের পরিমাণ কম থাকলেও বিক্রি হচ্ছিল চড়া দামে। তবে কাঙ্ক্ষিত মাছ না পাওয়ায় জেলেদের মুখে তেমন হাসি ছিল না।
সকাল ৮টার দিকে কেবি বাজারে দেখা যায়, এক কেজি ওজনের মাছের পোন (৮০ পিস) বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের মাছের পোন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ পোন ৫৫ থেকে ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের মাছও বিক্রি হয়েছে। এসব মাছের পোন বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায়। কেবি বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা দৈনিক আস্থা কে জানান, ইলিশের বাইরেও বাজারের রূপচাঁদা, সাগরের বাইলা, লইট্যা, ঢেলা-চ্যালা, কঙ্কন, মেইদ, কইয়া ভোল, জাবা ভোল, জাবা, বউ মাছ, পোয়া, টোনাসহ বিভিন্ন মাছ বিক্রি হয়েছে প্রচুর। এসব মাছ আকার, আকৃতি ও চেহারা ভেদে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
তবে রূপচাঁদা সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এই ক্রয়-বিক্রয় রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে। সাগর থেকে মাছ ধরে আসা লতিফ, নজরুল, জাহিদসহ কয়েকজন জেলে দৈনিক আস্থা কে জানান, এ বছর ইলিশের মৌসুম শুরু হওয়ার পরে প্রথম কিছুদিন মাছ বেশি পাওয়া গেছে। তবে শেষ দিকে বড় মাছ পেলেও, পরিমাণে অনেক কম পেয়েছেন। বুধবার (১৪ অক্টোবর) থেকে ২২ দিন পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ। তাই এ সময়টা খুব কষ্টে যাবে কাটবে তাদের। কারণ এবার ট্রেলার মালিকরা লোকসানে পড়েছেন। ফলে মহাজনের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাবেন না তারা। আর সরকার ঘোষিত সহায়তা পাবেন কি-না, তাও অনিশ্চিত। মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম দৈনিক আস্থা কে বলেন, আমরা কেবি বাজার থেকে মাছ ক্রয় করে নিয়ে এলাকার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করি। মঙ্গলবার ইলিশ বিক্রির শেষ দিন। তারপরও বেশি দামে তিন পোনের মতো মাছ কিনেছি।
শেষদিন তো অনেকেই মাছ ক্রয় করবেন। কিন্তু বাজার যদি ভালো না হয় লোকসানে পড়তে হবে। উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি ইদ্রিস আলী বলেন, এ বছর মাছের সাইজ বড় থাকলেও পরিমাণ কম ছিল। তাই জেলেরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরাও তেমন লাভবান হতে পারবেন না। তবে গত বছরের মতো শীতের মৌসুমে যদি সাগরে বেশি ইলিশ পাওয়া যায়, তাহলে জেলে ও ব্যবসায়ীরা লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা রাখি। মা ইলিশ রক্ষার জন্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ অক্টোবর থেকে ০৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা ও বিপণন বন্ধ থাকবে।