উদ্দেশ্য প্রনোদিত অভিযোগ থেকে খারিজ পেলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ওদুদ
সকল নাটকীয়তা শেষে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা পরিষদের ২ বারের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরিদ হাসান ওদুদ এর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। প্রধান বিচারপতি সহ ৭ জন বিচারপতি উক্ত বেঞ্চে উপস্তিতি ছিলেন।
এর আগে গত গত বুধবার ৫ই মে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ সামসুল আলম স্বাক্ষরিত (স্বারক নং-৪৬.০৪৫.০২৭.০৮.১৫০.১৫০.২০১৮-২৭৪) আদেশে সাময়িক বরখাস্ত হয় পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ।
প্রজ্ঞাপন সুত্রে উল্লেখ করা হয় রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ উপজেলা পরিষদের অধিগ্রহণকৃত জমিতে নির্মিত ১০টি দোকান তার আপন ভাই ও ফুফাতো ভাইযের নামে বরাদ্ধ দেওয়া,রাজম্ব তহবীল ব্যবহারের নির্দেশিকা অনুসরণ না করে গরীব/মেধাবী শিক্ষার্থীদের পরিবর্তে নিজেস্ব লোকের সন্তানদের মধ্যে বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে অর্থ আত্বসাথ করা, বয়স্ক ভাতা কর্মসূচী বাস্তবায়ন নীতিমালা (সংশোধিত) ২০১৩ অনুসরণ না করে বয়স্কভাতা প্রদান এবং নিয়ম বহিঃর্ভত ভাবে উপজেলা পরিষদের ফান্ড থেকে পাংশা পৌরসভা এলাকায় প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া সর্ম্পকে আনীত অভিযোগ গুলো বিভাগীয় কমিশনারের তদন্তে প্রমানিত হয়েছে এবং যেহেতু তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে জবাব প্রদানের জন্য বলা হলে তিনি জবাব দেননি এবং পরবর্তীতে ব্যাক্তিগত শুনানী প্রদানের জন্য বলা হলে তিনি শুনানীতেও অংশ গ্রহণ করেননি।
সাময়িক বরখাস্তের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ হাসান ওদুদ হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন।
১৯ মে রিটের ভার্চুয়াল শুনানি শেষে বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি সরদার মো. জাহাঙ্গীরের আদালত “উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ হতে পিটিশনারকে ৫ মে তারিখের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানাতে ৪ সপ্তাহের রুল জারি করেন” এবং আদালত এক অন্তবর্তীকালীন আদেশের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেন।
মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ এর প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (২৭শে মে)সকাল ১১ টার সময় নেতাকর্মী ও সাংবাদিকের উপস্তিতে অধ্যাপক ফরিদ হাসান ওদুদ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এসময় ফরিদ হাসান ওদুদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উওরে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ তোলা হয়েছে তার কোন সত্যতা নেই। আমি প্রথম মেয়াদে যখন উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম সেই সময়( ২০১৮) সালে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তোলা হয়। সেই অভিযোগ ২য় মেয়াদে আমি চেয়ারম্যান হলে তোলা হয় যার নেপথ্যে সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম নিজে। যা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ। আমাকে সাময়িক বরখাস্ত দেখানো হলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এমপির চামচা জালাল বিশ্বাস আমার নেমপ্লেটে ভেঙে ফেলে এবং আমার রুমে আমার চেয়ার ব্যবহার করছে, যা কিনা তিনি পাশে অন্য একটা চেয়ার ব্যবহার করতে পারতো। আমি এর জন্য ভাইস চেয়ারম্যান জালাল বিস্বাস এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। পরে তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
তবে মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ এর বিরুদ্ধে আপিল করা হলে, উক্ত আপিলের শুনানির দিন ধার্য করা হয় সোমবার (৩১ মে) কিন্তু উক্ত আপিলের শুনানির দিন পরিবর্তন করে বুধবার (২ এপ্রিল) ধার্য করা হয়। একই সাথে পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জালাল বিস্বাস সহ ৯ জনের করা অনাস্থার বিষয় টি ও তোলা হলে, সকল অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রনোদিত, বানোয়াট বলে অবিহিত হয় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এর বেঞ্চে। যার ফলে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরিদ হাসান ওদুদ এর বিরুদ্ধে থাকা সকল অভিযোগ থেকে খারিজ করে দেওয়া হয়।
এসময় অধ্যাপক ফরিদ হাসান ওদুদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন সত্যের জয় হয়েছে।