এক মাসেও স্টেশন মাস্টার পেলো না হিলি
হিলি প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের রেলস্টেশন চলছে স্টেশন মাস্টার ছাড়াই। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে একজন বুকিং সহকারীকে দিয়ে এই স্টেশনের যাবতীয় কাজ চলছে। বুকিং সহকারী জানান, গত ৩০ এপ্রিল স্টেশন মাস্টার ট্রেনিংয়ে যাওয়ার পর নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এমনিক ভারপ্রাপ্ত হিসেবেও কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। রেলের পশ্চিমাঞ্চলীয় পরিবহন কর্মকর্তারা বলেন, জনবল সংকটের কারণে স্টেশন মাস্টার নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। শিগগিরই স্টেশনমাস্টার নিয়োগ দেওয়া হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘একে তো নেই যাত্রী ছাউনি, তারওপর নতুন সমস্যা। সঙ্গে যোগ হয়েছে প্ল্যাটফর্মবিহীন ২ নম্বর লাইনে ট্রেন দাঁড়ানো। এই লাইনে প্ল্যাটফর্ম না থাকায় যাত্রীরা সহজে ট্রেনে উঠানামা করতে পারেন না। গত ৩০ এপ্রিল অস্থায়ী স্টেশন মাস্টার চলে যাওয়ায় হিলি এখন মাস্টার শূন্য। একজন বুকিং সহকারী ও ৩ জন স্টাফ দিয়েই চালছে এই স্টেশন।’
ট্রেন যাত্রী সুলতানা বলেন, ‘আমি রাজশাহী যাবো। বরেন্দ্র ট্রেন ধরতে এসেছি। সঙ্গে ছোট ছেলে-মেয়ে ও ব্যাগ আছে। শুনলাম ট্রেন নাকি ২ নম্বর লাইনে দাঁড়াবে। এই লাইনে আবার প্ল্যাটফর্ম নেই। এখন নিজে উঠবো না বাচ্চাদের আগে তুলে দেবো, সেটাই ভাবছি। আমি ওঠার আগেই যদি ট্রেন ছেড়ে দেয়, বাচ্চারা ট্রেনে উঠে কান্নাকাটি শুরু করবে। আবার আমি ওঠার পর যদি বাচ্চারা উঠতে না পারে, তাহলে আরেক সমস্যা দেখা দেবো। ব্যাগের কথাও বাদই দিলাম। ব্যাগগুলো হয়তো কোনো কারও হাতে দিয়ে তুলে নিতে পারবো। এছাড়া কোনো উপায় নেই।’
এই অসুবিধার কথা স্বীকার করে হিলি রেলস্টেশনের বুকিং সহকারী মো. সুজন মিয়া বলেন, ‘আগে হাজিরা ভিত্তিতে একজন স্টেশন মাস্টার ছিলেন। তিনি গত ৩০ এপ্রিল চলে গেছেন। এরপর এখানে আর কোনো স্টেশন মাস্টার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাই ট্রেনগুলো প্ল্যাটফর্মবিহীন ২ নম্বর লাইনে দাঁড়াচ্ছে। আমি শুধু টিকিট বিক্রি করছি। ট্রেন আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে উত্তরে বিরামপুর ও দক্ষিণে পাঁচবিবি রেলস্টেশন থেকে। আমি যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ মে দৈনিক আস্থায় ’হিলি রেলস্টেশনে মাস্টারশূন্য-যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে, শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসেন দৈনিক আস্থাকে বলেন, ‘স্থায়ী স্টেশন মাস্টার না থাকায় হিলিতে আগে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি গত ৩০ এপ্রিল চলে গেছেন। এখন আমাদের জনবল সংকট। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে স্টেশন মাস্টার চেয়েছি। মাস্টারদের প্রশিক্ষণ চলছে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে শিগগিরই স্টেশন মাস্টার নিয়োগ দিতে পারবো।’