ধর্ষণ মামলার ১৭ দিন পার হলেও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ছয় আসামির কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন ধর্ষণের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেই ছাত্রী। বুধবার আদালত প্রাঙ্গনে মামলার বাদী সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘শিঘ্রই আসামি গ্রেফতার না হলে তাকে আত্মহত্যার পথই বেছে নিতে হবে। আমি বুঝতে পারছি, আমার মৃত্যুর আগে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করবে না, তাদের টনক নড়বে না।’
এর আগে আসামিদের গ্রেফতার না করায় আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা চেয়ে আজ আবেদন করেন মামলার বাদী। মামলাটি আমলযোগ্য এবং জামিন অযোগ্য অপরাধের হওয়ায় পুলিশ যেকোনো সময় গ্রেফতার ক্ষমতা সংরক্ষণ করায় আদালত কোনো আদেশ দেননি। এদিকে মামলাটির প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য থাকলেও পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না করায় আগামী ২৭ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের নতুন তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার এ তারিখ ধার্য করেছেন।
স্বামী বিদেশ,পরকীয়ায় মগ্ন সুন্দরী স্ত্রী
আত্মহত্যা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী বলেন, ‘মামলা করেছি ১৭ দিন হয়ে গেছে। এখনো কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের কাছে গেলে তারা বলেন, আসামিরা তথ্যপ্রযুক্তিতে অনেক এক্সপার্ট তাই তাদের ট্রেস করা যাচ্ছে না। তারা চেষ্টা করছেন।’
তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘আসামিরা কি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী থেকে তথ্যপ্র্রযুক্তিতে বেশি এক্সপার্ট? সারা দেশে ধর্ষণের মামলার এত আসামি গ্রেফতার হয়, আমার মামলার আসামি গ্রেফতার হয় না। পুলিশের ভূমিকা সন্দেহজনক। কোনো অদৃশ্য শক্তি এখানে কাজ করছে কি না, জানি না। আদালতে দুই দফা আবেদন করলাম, আদালত থেকে কোনো সাহায্য পাচ্ছি না। সব মিলিয়ে আমি চরম হতাশ। আমি বুঝতে পারছি, আমার মৃত্যুর আগে পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করবে না, তাদের টনক নড়বে না। পুলিশকে আসামিদের গ্রেফতরের বিষয়ে টনক নড়াতে আমাকে আত্মহত্যাই করতে হবে। শিঘ্রই আসামি গ্রেফতার না হলে আমি আত্মহত্যাই করব।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন বলেন, ‘মামলার আসামি ভিপি নুরসহ ছয়জন। ভিপি নুর প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়, টেলিভিশনে টক-শো করে বেড়ায়। আর পুলিশ নাকি আসামিদের খুঁজে পায় না। এ মামলায় আসামিদের গ্রেফতরের বিষয়ে পুলিশের আচরণ সন্দেহজনক।
আইনজীবী বলেন, তার মামলায় আসামিরা প্রভাবশালী। তারা গ্রেফতার না হওয়ায় তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ ছাড়া আসামিরা গ্রেফতার না হলে মামলার তদন্তও প্রভাবিত হওয়ায় সম্ভবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বাদী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ (২৮), একই সংগঠনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন (২৮), বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি নাজমুল হুদা (২৫) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহিল বাকি(২৩)।
গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলাটি দায়ের করেন। এরপর গত ২১ সেপ্টেম্বর বাদী কোতোয়ালী ও শাহবাগ থানায়ও একই অভিযোগে আরও দুইটি মামলা দায়ের করেন।