মহামারি করোনা ভাইরাসে যখন মানুষ কার্যত ঘরবন্দি ঠিক সেই সময়ে বিশ্বজুড়ে জয়প্রিয়তা পেয়েছে কম্পিউটার ও মোবাইল গেম খেলা। সেই সঙ্গেও দেশেও গেমস খেলার হারও বেড়েছে। দেশীয় বেশকিছু গেমস পাওয়া গেলেও শীর্ষে রয়েছে বিদেশি গেমস। দেশের গেমারদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয়’র তালিকায় রয়েছে পাবজি, ফোর্টনাইট, ফ্রি-ফায়ার, ভ্যালোরেন্ট ইত্যাদি গেমস।
আইএসপিগুলোর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে এই সময়ে খুব খেলা হচ্ছে পাবজি, ফোর্টনাইট, ফ্রি-ফায়ার, ভ্যালোরেন্ট, লিগ অব লেজেন্ড, ফিফা-২০২০, কাউন্টার স্ট্রাইক ইত্যাদি গেমস। এরমধ্যে ভ্যালোরেন্ট গেমটি গত ৩-৪ মাস আগে এসেছে। এসেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে এসেছে। ফ্রি-ফায়ার বেশ আগে এলেও সম্প্রতি গেমটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
এদিকে বিশ্বের নামকরা সব প্রতিষ্ঠানের জরিপেও উঠে এসেছে মোবাইল গেমের জনপ্রিয়তার কথা। বাজার গবেষণা ইনস্টিটিউট সাইমন কুচার অ্যান্ড পার্টনারস ও দায়নাতার সমন্বিত উদ্যোগে বিশ্বের ১৭টি বাজারে ১৩ হাজার ব্যবহারকারীর মধ্যে একটি গবেষণা পরিচালনা করা হয়। এতে বৈশ্বিক গেমিং শিল্প বিষয়ে বেশ ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠান দুটির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিডিও গেমিং শিল্পের সব সূচক ঊর্ধ্বমুখী।
বাজার গবেষণা ইনস্টিটিউট সাইমন কুচার অ্যান্ড পার্টনারস ও দায়নাতার গবেষণায় দেখা যায়, নমুনা হিসেবে নেওয়া ১৩ হাজার ব্যবহারকারীর মধ্যে করোনা শুরু হওয়ার আগে ভিডিও গেম খেলতেন ৬৩ শতাংশ। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবের পরে ৮২ শতাংশ ভিডিও গেম খেলা শুরু করেছেন।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে বৈশ্বিক ভিডিও গেমিংয়ের বাজার ছিল ১৪৮ বিলিয়ন ডলার। পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, আগের বছরের চেয়ে ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে এই বাজার ১৬০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। তবে করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর নতুন পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০২০ সালে বৈশ্বিক গেমের বাজার হবে ১৭০ বিলিয়ন ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার জানায়, করোনার কারণে বাসায় থাকার ফলে মার্কিনিদের মধ্যে ভিডিও গেমের জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে। মার্কিনিরা যেসব গেমে বেশি সময় দিচ্ছেন তার মধ্যে আছে ‘অ্যানিমেল ক্রসিং: নিউ হরাইজনস’, ‘কল অব ডিউটি: মর্ডান ওয়ারফেয়ার’, ‘এমএলবি দ্য শো ২০’, ‘রেসিডেন্ট ইভিল ৩’ এবং ‘এনবিএ ২কে২০’।
বৈশ্বিক গেমিং বাজার সম্পর্কে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাইমন কুচারের গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ লিসা জাগের বলেন, করোনার আঘাতে অর্থনীতির বিভিন্ন শাখা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গেমিং শাখাটি বেশ সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছে। গেমিং বাজার বৃদ্ধিতে জ্বালানি হিসেবে কাজ করেছে কোভিড-১৯। কোয়ারেন্টিন নীতি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং বাকিসব উপাদান মিলিয়ে ২০২০ সালে পূর্বাভাসের আয়কেও ছাড়িয়ে যেতে পারে অনেক প্রতিষ্ঠান।
আর তাতেই বলা যেতে পারে করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠান মার খেলেও দ্রুত বর্ধনশীল এই গেমের বাজারকে আরও বেশি গতিশীল করেছে।