কলকাতায় সকালে এক তীব্র বিস্ফোরণে একটি ক্লাব ঘরের ছাদ উড়ে গেছে। বেলেঘাটা গান্ধি ময়দানের কাছে একটি দোতলা ক্লাবে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের আওয়াজে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীরা । ক্লাব সদস্যদের দাবি, দেয়ালে বোমা ছোড়া হয়েছিলো। তবে পুলিশের ধারণা ক্লাবের দোতলার ওই ঘরেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। একই মত ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের। ১৫০ বেলেঘাটা মেইন রোডের ওই ক্লাবের নাম বেলেঘাটা গান্ধি ময়দান ফ্রেন্ডস সার্কেল।
এলাকার এক লোক জানান, সকাল ৭টার দিকে তীব্র আওয়াজ শুনতে পান তিনি। এলাকার অনেকেই সেই আওয়াজ শুনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। তারা ক্লাবের কাছে গিয়ে দেখতে পান যে, ক্লাব ঘরের দোতালার ছাদের একাংশ উড়ে গেছে। দেয়ালেরও একাংশ ভেঙে গেছে। ভেতরের দেয়ালেও প্রবল তাপে পুড়ে যাওয়ার মতো কালো ছোপ দেখা গেছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বেলেঘাটা থানার পুলিশ। তারা জায়গাটি নিয়ন্ত্রণে নেন। এরপর কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও বোমা ডিজপোজাল স্কোয়াডে খবর দেয়া হয়।
ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনের দাবি, দোতলার ওই ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিলো। সেই সিলিন্ডার ফেটে গিয়েছে কোনোভাবে ফলে বিস্ফোরণ হয়েছে।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই দাবি করেছেন, ওই ক্লাবে কোনো গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিলো না। ক্লাব সদস্যদের অন্য একটি অংশের দাবি, ওটা বাচ্চাদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বোমা রাখার অভিযোগ ভিত্তিহীন। বরং বাইরে থেকে কেউ এসে দেয়াল লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়ে পালিয়ে গেছে বলে পাল্টা দাবি করেছে তারা।
তাদের এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, বাইরে নয় বিস্ফোরণ ক্লাবের ভেতরেই ঘটেছিলো। কারণ ভেতরে স্প্লিন্টার পাওয়া গিয়েছে। সালফার বা গন্ধক ও হাত বোমায় ব্যবহৃত অন্যান্য উপকরণেরও চিহ্ন মিলেছে সেখানে।
এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ক্লাবটি ‘রাজু নস্করের ক্লাব’ বলেই পরিচিত। রাজু নস্কর ওই এলাকার তৃণমূল নেতা। তোলবাজি, বোমাবাজি, গুলি চালানোর মতো অপরাধে এর আগে বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হওয়া রাজু নস্কর এলাকায় ‘বাহুবলী’ হিসেবে পরিচিত।
বিস্ফোরণ কিভাবে হয়েছে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বেলেঘাটা থানার কর্মকর্তারা। তবে কলকাতা পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখার কর্মকর্তাদের একাংশের সন্দেহ ওই ক্লাবে কোনো ধরনের বিস্ফোরক মজুত করা ছিলো।
এলাকার বাসিন্দাদেরও ইঙ্গিত, বোমা বা বোমা তৈরির উপকরণ মজুত ছিলো সেখানে। আর তা থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে। তবে কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়া বলা সম্ভব নয় যে ঠিক কিভাবে ওই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
সূত্র- আনন্দবাজার