কৃষককন্যা যেভাবে হলেন যৌনকর্মীঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে নতুনভাবে বাড়ছে যৌনকর্মী এর সংখ্যা। শিশু-কিশোরী-নারীকে যৌনকর্মী এর পেশায় লিপ্ত করানো আইনে নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও যৌনকর্মী এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষককন্যা থেকে যৌনকর্মী ।
পল্লীর প্রভাবশালী বাড়িওয়ালিদের ছত্রছায়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নানা কৌশলে সাধারণ মেয়েদের ফুসলিয়ে ওই যৌনপল্লীতে নিয়ে বিক্রি করছে সংশ্লিষ্ট দালালচক্র। ওই পল্লী থেকে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে এক তরুণীকে উদ্ধার ও সংশ্লিষ্ট বাড়িওয়ালি রোজিনা বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেবে যুক্তরাষ্ট্র: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, উদ্ধার ওই তরুণীর বাড়ি নাটোর সদর থানা এলাকায়। বাবা হতদরিদ্র কৃষি শ্রমিক। গত মার্চ মাসের প্রথম দিকে ঢাকা শহরে গার্মেন্টে চাকরি দেয়ার কথা বলে মেয়েটিকে নাটোর থেকে ফুঁসলিয়ে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে নিয়ে আসে অজ্ঞাতপরিচয় এক দালাল। পরে যৌনপল্লীর বাড়িওয়ালি রোজিনা বেগমের কাছে মেয়েটিকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে পালিয়ে যায় সে। তখন থেকে নিজ বাড়িতে আটকে রেখে জোর করে ওই মেয়েটিকে দেহ ব্যবসার কাজে লাগিয়ে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল বাড়িওয়ালি রোজিনা।
এর মাঝে ওই পল্লী থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য মেয়েটি বহুবার চেষ্টা চালায়। কিন্তু বাড়িওয়ালি রোজিনা বেগম ও তার লোকজনের কড়া নজরদাড়ির কারণে মেয়েটি পালাতে ব্যর্থ হয়। এ অবস্থায় গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সুযোগ বুঝে মেয়েটি কৌশলে রোজিনার বাড়ি থেকে বের হয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। টের পেয়ে মেয়েটিকে ফিরিয়ে অনার জন্য পিছু নেয় ওই বাড়িওয়ালি। মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন দ্রুত এগিয়ে আসে। এ সময় স্থানীয় জনতা মেয়েটিকে উদ্ধার ও সংশ্লিষ্ট বাড়িওয়ালি রোজিনা বেগমকে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করে।
আরো পড়ুন: আটক ৪ বাংলাদেশিকে ৬ মাস পর দেশে ফেরত দিল ভারত
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই তরুণী নিজে বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট বাড়িওয়ালি রোজিনা বেগম ও অজ্ঞাতনামা এক দালালের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোয়ালন্দঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর করে বলেন, মামলার আসামি দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর বাড়িওয়ালি রোজিনা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী কোনো শিশু, কিশোরী বা নারীকে যৌনপেশায় লিপ্ত করানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের উদ্ধার ও দালালদের গ্রেফতারে নিয়মিত পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।