খাগড়াছড়িতে কাবাডি টুর্নামেন্ট অনুষ্টিত
মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াছঃ
তারুণ্যের মাঝে খেলাধুলার গুরুত্ব বাড়াতে খাগড়াছড়িতে আয়োজিত যুব কাবাডি অনূর্ধ্ব-১৮ টুর্নামেন্ট জমকালো পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া অফিসের ব্যবস্থাপনায় মাসব্যাপী তারুণ্যের উৎসবের অংশ হিসেবে এ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। “এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই খেলায় অংশ নিয়েছে ছয়টি দল, যেখানে বালক ও বালিকা উভয় বিভাগের খেলা ছিল।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রুমানা আক্তার। সভাপতিত্ব করেন জেলা ক্রীড়া অফিসার হারুন অর রশিদ। ফাইনালে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলা বালক দল মুখোমুখি হয়। উত্তেজনাপূর্ণ এই খেলায় খাগড়াছড়ি সদর উপজেলাকে পরাজিত করে গুইমারা উপজেলা চ্যাম্পিয়নের মুকুট অর্জন করে। অন্যদিকে বালিকা বিভাগে গুইমারা উপজেলাকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা।
খেলাধুলার গুরুত্ব তুলে ধরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুমানা আক্তার বলেন, বর্তমান সময়ে মোবাইল আসক্তি তরুণদের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এই ধরনের খেলাধুলা তরুণ প্রজন্মকে মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্ত করে শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি আরও বলেন, তরুণদের ইতিবাচক কাজে নিয়োজিত রাখতে খেলাধুলার বিকল্প নেই।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী দলগুলো তাদের প্রতিভার উজ্জ্বল প্রকাশ ঘটিয়েছে। খেলায় পানছড়ি, মহালছড়ি, খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলা থেকে বালক দল এবং গুইমারা ও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা থেকে বালিকা দল অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি দলই অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে দর্শকদের মনোমুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক নজরুল ইসলাম ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা। তাঁরা সবাই খেলাধুলার এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে তরুণদের জন্য আরও বেশি কার্যক্রম আয়োজনের আহ্বান জানান। এই ধরনের আয়োজন তরুণদের মাঝে প্রতিযোগিতার মনোভাব ও দলগত কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে বলে তারা মত প্রকাশ করেন।
খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টে ছিল দর্শকদের ব্যাপক অংশগ্রহণ। খেলাধুলার প্রতি স্থানীয় জনগণের এমন উৎসাহ আয়োজনকে সফল করেছে। তরুণ প্রজন্মকে মাদক ও মোবাইলের আসক্তি থেকে দূরে রাখতে এ ধরনের উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছেন।
জেলার বিভিন্ন পর্যায়ে খেলাধুলার কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর বক্তারা গুরুত্বারোপ করেন। তরুণদের সঠিক পথে পরিচালিত করতে এবং তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে খেলাধুলার ভূমিকা অপরিসীম।
খাগড়াছড়ির এই কাবাডি টুর্নামেন্ট নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেম ও উন্নয়নের প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছে। এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে তরুণরা সমাজের জন্য বড় অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন আয়োজকরা।