ঢাকা-১৮ আসনে আসন্ন নির্বাচনে গণসংযোগে গেলেই লাঠিসোঁটা হাতে মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।
জাহাঙ্গীরের অভিযোগ, নবম দিনের মতো আজ শনিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় তুরাগ থানার রানাভোলা থেকে ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ শুরুর কথা ছিল। পুলিশের অনুমতি নিয়ে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী, দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসানসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা রানাভোলায় জামায়েত হন। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও প্রশাসনের লোকজন তা ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
জাহাঙ্গীর বলেন, আজ ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে পুলিশের অনুমতি নিয়ে গণসংযোগের কর্মসূচি দিয়েছিলাম। রানাভোলায় আমার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে আমাদের যেসব নেতাকর্মী জমায়েত হয়েছিলেন, তাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও প্রশাসন ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। এমন যদি হয় তাহলে নির্বাচন কীভাবে হবে? তিনি বলেন, আমরা যে এলাকায় কর্মসূচি দিয়েছি, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে, সেখানে আওয়ামী লীগের গুন্ডা বাহিনী রাস্তায় রাস্তায় লাঠিসোঁটা হাতে মিছিল করছে। মহড়া দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ চায় একটা ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিতে, যাতে আমরা প্রচার করতে না পারি। সেজন্য তারা এসব পাঁয়তারা করছে। আমাদের দল থেকে, আমাদের নেতারা সর্বোচ্চ ধৈর্যসহকারে প্রচার চালিয়ে যেতে বলেছেন। আমরাও তাই করছি।
বিএনপির এ প্রার্থী আরো বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী চাচ্ছে না জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাক। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাস করছে, বিভিন্নভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমরা যেখানে কর্মসূচি দিচ্ছি, গত ২৪ অক্টোবর থেকে সেখানে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। অথচ প্রতিটি কর্মসূচি দেয়ার আগে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশের অনুমতি নিয়েই কর্মসূচি দেই। যেখানে আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে কর্মসূচি করেছে, এমন স্থানে কর্মসূচি দিলেও সেখানে তারা পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে।
‘ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে ভোটাররা ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে’ উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর বলেন, এরই মধ্যে ধানের শীষের পক্ষে জনগণের সাড়া দেখে আওয়ামী লীগ ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছে। যার কারণে জনগণ যাতে ভোটকেন্দ্রে না যায় সেজন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী সবধরনের কর্মকাণ্ড করছে, পরিকল্পনা করছে। আসলে আওয়ামী লীগ তো দিনের ভোট রাতে করতে পছন্দ করেন। তাদের তো ভোটের প্রয়োজন হয় না। ভোটের যে উৎসব তা আওয়ামী লীগের প্রার্থী করতে চান না। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গেলেই তো তাদের ভরাডুবি ঘটবে। আশা করি, জনগণ আাওয়ামী লীগের সব বাধা উপেক্ষা করে আগামী ১২ নভেম্বর ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোট পছন্দের ব্যক্তিকে দিয়ে ফলাফল ঘরে নিয়েই ফিরবে। কারণ, এ আসনে যত উন্নয়ন হয়েছে তা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া করেছেন।
জাহাঙ্গীর অভিযোগ করেন, ঢাকা-১৮ আসনে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার উঠেছে। এই গণজোয়ারে ভীত হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে যাচ্ছে, তাদের ঘরে না থাকার জন্য থ্রেট করছে যে, আপনার সন্তান, আপনার স্বামী আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত যেন বাসায় না থাকেন। থাকলে তাদের সমস্যা হবে। অথচ আমাদের নেতাকর্মীদের নামে কোনো ওয়ারেন্ট নেই। আওয়ামী লীগ প্রার্থী নিজেও আমাদের নেতৃবৃন্দকে থ্রেট করছে। আমাদের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি দিচ্ছে।
তবে যতই বাধা আসুক জীবন দিয়ে হলেও জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন বিএনপির এই প্রার্থী। এদিন সকাল ১১টা থেকে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে লেখক ড্রাইভ রোড, চৌরাস্তা, রবীন্দ্র সরণি রোড, হাউজ বিল্ডিং, মাসকট প্লাজার সামনে এসে বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে গণসংযোগ শেষ করেন তিনি।
গণসংযোগে এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আব্দুস সালাম, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, যুববিষয়ক সহ-সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, মামুন হাসান, সালাউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।