গাইবান্ধায় এক রশিতে দুই বন্ধুর লাশ, প্রকৃত কারণ বের করল পিবিআই
শেখ মো: আতিকুর রহমান আতিক, মফস্বল ডেস্ক থেকে :
গাইবান্ধায় এক রশিতে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দুই বন্ধুর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাটি আত্মহত্যা নয়।
এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
পরকীয়া প্রেমে বাধা দেয়ার জেরেই তাদের শ্বাসরোধে হত্যার পর এক রশি দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
১৫ আগস্ট রোববার দুপুরে গাইবান্ধা জেলা পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাইবান্ধার পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ।
তিনি জানান, গত ১২ আগস্ট সকালে সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম পিয়ারাপুর গ্রামের ঘাটালের ভিটা নামক স্থান থেকে এক রশিতে ঝুলন্ত দুই বন্ধু মৃণাল চন্দ্র দাস (২৪) ও সুমন চন্দ্র দাসের (২৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রচারও চালায় অভিযুক্তরা।
এ ঘটনায় একই দিন সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত সুমন চন্দ্র দাসের বাবা সুশান্ত কুমার দাস। পরে হত্যায় জড়িত সন্দেহে একই এলাকার প্রদীপ চন্দ্র দাস নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার প্রদীপ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
আদালতে দেয়া জবানবন্দির বর্ণনা করে পিবিআই পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ জানান, কিছুদিন ধরে নিহত সুমন চন্দ্র দাসের মায়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন একই এলাকার নিতাই চন্দ্র দাস। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে সুমন তার বন্ধু মৃণালকে সঙ্গে নিয়ে বাধা দেয়। এ নিয়ে দুই বন্ধুর সঙ্গে নিতাই চন্দ্রের কথা কাটাকাটি ও তর্ক থেকে শক্রতার জন্ম নেয়।
গত ১১ আগস্ট নিতাই চন্দ্র দাস তার বন্ধু গ্রেফতার প্রদীপ চন্দ্রসহ কয়েকজন মৃণাল ও সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সেই মোতাবেক কৌশলে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় দুই বন্ধুকে। এরপর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে এক রশিতে তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডার এই মামলার রহস্য দ্রুত উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ মামলায় পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
নিহত মৃণাল চন্দ্র দাস সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের চুনিয়াকান্দি গ্রামের মৃত রামনাল চন্দ্রের ছেলে ও সুমন চন্দ্র দাস একই ইউনিয়নের পাঠানডাঙ্গা মাঝিপাড়া গ্রামের মিঠা সাধু দাসের ছেলে। তারা এলাকায় মাছের ব্যবসা করতেন।