গাইবান্ধায় মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে তিনটি পরিবার বসবাস করছে পরিত্যক্ত ভবনে
শেখ মো: আতিকুর রহমান আতিক, মফস্বল ডেস্ক :
২৫ বছর আগে পরিত্যক্ত গাইবান্ধা সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের তিনটি আবাসিক ভবন।
সেই ভবন তিনটি ২৫ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে গণপূর্ত বিভাগ।
তবুও মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে তিনটি পরিবারের শিশুসহ অন্তত ১৫ জন সদস্য দীর্ঘদিন থেকে এই ভবন গুলোতে বসবাস করে আসছেন। দুই যুগের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও অদৃশ্য কারনে আজ অবধি ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
বর্তমানে ভবনগুলোর অবস্থা এতোটাই জরাজীর্ণ যে, যেকোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা আংশকা করছেন গণপূর্ত বিভাগ।
প্রধান শিক্ষকের দাবী, স্বরণকালের ভয়াবহ রানা প্লাজা ট্রাজেডির সময় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই পরিবার গুলোকে সরিয়ে দিলেও পরবর্তীতে লিখিতভাবে মৃত্যুর দায় মাথায় নিয়ে পূনরায় বসবাস শুরু করেন তারা।
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ভবনগুলো নিয়ে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পরিবারগুলো বসবাস করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
তারা মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবন গুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ সাইনবোর্ড না লাগিয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।
যে কারণে অনেকেরই বিষয়টি অজানা রয়েছে।
এখানে বসবাসরত সবাইকে অন্যত্রে সরিয়ে নিয়ে দ্রুত ভবনগুলো ভেঙ্গে দিলে এই পরিবারগুলো বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাবে বলেও মনে করেন তারা।
অন্যদিকে, আবাসিক ভবনগুলো শিক্ষকদের থাকার জন্য কত সালে নির্মাণ হয়েছে এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর গাইবান্ধায় কোন তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন সেখানকার উপ-সহকারী প্রকৌশলী স.ম আব্দুল্লাহেল লাকী।
তবে তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে গণপূর্ত বিভাগ ভবনগুলো বসবাসের জন্য অনুপযোগী হিসেবে
ঘোষণা করে ভেঙ্গে দেয়ার নির্দেশ দেয়।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাসকারী সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক শ্রী নয়ন চন্দ্র বলেন, ‘একটি ভবনে পরিবার নিয়ে থাকি। ভবনটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। কিন্তু আর্থিক দিক বিবেচনা করে আমাকে এখানে থাকতে হচ্ছে।’
সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক মহসিন আলী বলেন, ‘জরাজীর্ণ এসব ভবনে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে কোনও রকমে বসবাস করছি।
তবে ঝড়-বৃষ্টির সময় ভবন ভেঙে পড়ার ভয়ে আতঙ্কে থাকি।
কিন্তু কোন উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই এখানে বসবাস করতে হচ্ছে আমাদের।
সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী বাদল রায় বলেন, এসব বাসায় ভাড়া ছাড়াই ঝুকি নিয়ে থাকি আমরা ।
আমাদের বেতন দিয়ে সংসার চালানোই দায়, এর পরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকি কি করে।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পরিবার গুলোর বসবাসের বিষয়ে সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানা বানু বলেন,এই ভবন গুলোতে যারা আছে তাদের কাছে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন ভাড়া নেয় না।
এবং তারা সকলেই নিজে লিখিতভাবে মৃত্যুর দায় নিয়ে আছে।
এর আগে একবার তারা চলে গেলেও পূনরায ফিরে এসে এমন আবেদন দিয়ে বসবাস করছেন।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই।
তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোন পরিবারকে থাকতে দেয়া দায়িত্বহীনতার পরিচয়। আমি বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিব।