ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ২২ হাজারে পৌঁছেছে। এদের মধ্যে ৯ হাজারের বেশি শিশু। এছাড়া গাজায় আহত হয়েছে অন্তত ৫৭ হাজার ৬৯৭ জনের বেশি। এদিকে স্থল অভিযানের পর প্রথমবারের মতো গাজা থেকে হাজার হাজার সেনাকে ফিরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েল গাজায় ১৩টি গণহত্যা করেছে। এর মধ্যে ১৫৬ জন নিহত এবং ২৪৬ জন আহত হয়েছে। খবর আল জাজিরার
ইসরায়েল এখন পর্যন্ত গাজায় ৩২৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে হত্যা করেছে এবং ১০৪টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস করেছে। এছাড়া গাজার ১৫০ স্বাস্থ্য সুবিধাকে লক্ষ্য করেছে ইসরায়েল এবং ৩০টি হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উল্লেখ করেছেন যে, ৯৯ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে অমানবিকভাবে আটক করেছে ইসরায়েল।
আশরাফ আল-কুদরা জানিয়েছেন, গাজায় ১৯ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ দুর্ভিক্ষ ও মহামারির মুখে পড়েছে। ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে যে, ১৯৪৮ সালের নাকবার পর এই বছর শহিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
ইউনিসেফের পরিচালক জেমস এল্ডার বলেছেন যে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে গাজার এক হাজারেরও বেশি শিশুর এক বা উভয় পা কেটে ফেলা হয়েছে।
ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কমান্ডারসহ মোট ৪১ জন ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সোমবার বলেছে যে, তাদের মধ্যে কমপক্ষে ২৮ জন গাজায় আহত হয়েছে। তবে অন্যরা কোথায় আহত হয়েছে তা নির্দিষ্ট করেনি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে যে, ৭ অক্টোবর থেকে আহত সৈন্যের সংখ্যা বেড়ে ২,২৩৪ হয়েছে। রোববার এই সংখ্যা ছিল ২,১৯৩ জন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পরিসংখ্যান অনুসারে, এখনও ৪৫৪ জন সৈন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন যার মধ্যে ৪৫ জন গুরুতর এবং ২৭২ জন মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৫০৬ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গাজায় স্থল অভিযানে নিহত হয়েছে ১৭২ জন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ঘোষণা করেছে যে, তারা অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রথমবারের মতো অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে হাজার হাজার সেনা প্রত্যাহার করবে।
খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের চাপের মুখে যুদ্ধ আরও কম তীব্র করছে ইসরায়েল। তাদের মতে- এতে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা কম ঘটবে।
তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, পাঁচটি ব্রিগেড বা কয়েক হাজার সেনাকে প্রশিক্ষণ ও বিশ্রামের জন্য ছিটমহল থেকে বের করে আনা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত তাদের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত হামলা অব্যাহত রাখার অঙ্গিকার করেছে ইসরায়েল।