গুইমারায় গৃহবধূর আত্মহত্যা-স্বামী বলছে আমার সব শেষ
মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াছঃ খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলায় পারিবারিক কলহে মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস (২৬) নামে দুই সন্তানের জননী বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার (১০আগষ্ট/২১) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে পূর্ব হাজীপাড়ায় এঘটনা ঘটে।
সে পার্শবর্তী মাটিরাঙ্গা উপজেলার নতুনপাড়া এলাকার মোঃ আবু তাহেরের ছোট মেয়ে। জোবায়েদ (৭) ও জাহেদ (৫) নামে নিহত জান্নতুলের দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। একটি সূত্র পারিবারিক কলহের কথা স্বীকার করে বলেন, বিবাহের পর হতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ও দাম্পত্য কলহ বিরাজমান ছিল।
পারিবারিক সূত্র মতে জানাযায়, জালিয়াপাড়া এলাকার আবু বক্করের ছেলে প্রবাসী মোঃ হায়দার আলীর স্ত্রী নিজ বাড়ির টয়লেটে গিয়ে বিষপান করে। দীর্ঘ সময় পরও টয়লেট থেকে বের না হওয়ায়, জান্নাতুল ফেরদৌসকে ডাকাডাকির একপর্যায়ে উদ্ধার করে মানিকছড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাঁত ৯ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহতের লাশ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে তার মা-বাবার কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মোঃ হায়দার আলী বলেন, গত জুলাই মাসের ৮তারিখে আমি সৌদি আরব থেকে বাড়ি যাই। ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টেনে ছিলাম। সবাই হাসি খুশি। ৩০জুলাই শুক্রবার শশুর বাড়িতে বেড়াতে যাই। রবিবার আমরা ভাগনীর বাড়ি দাওয়াতে যাই।
দাওয়াত শেষে আমার স্ত্রী আমার শ^শুর বাড়ি চলে যায়। পরে ৪ঠা আগষ্ট বুধবার আমার বোনের বাড়ি দাওয়াতে আসতে বলি, সে দাওয়াতে আসবে না জানিয়ে বলে শুক্রবারে সে বাড়ি আসবে। আমি বলি তুমি আমাকে ভালবাস না। আমি বৃহস্পতিবার (৫ঠা আগষ্ট) চলে যাবো। আমার স্ত্রী না আসায় আমি ৫ই আগষ্ট বৃহস্পতিবার ঢাকা চলে আসি। ৬ই আগষ্ট শুক্রবার আমার স্ত্রী আমার বাড়ি আসে। এসে আমাকে ফোন দিয়ে বলে তুমি কোথায়? আমি বলি ঢাকায় আছি বিদেশ চলে যাবো।
আমার স্ত্রী আমাকে বলে তুমি যদি না আসো তবে, তুমি যখন বিমানে উঠবা আমি আত্নহত্যা করবো। অপর দিকে আমি ঢাকা এসে অফিসের কাগজ-পত্র ও ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করে, ১০ই আগষ্ট মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বিমানে উঠি। রাতেই সৌদি পৌছাই। আমি আমার স্ত্রীর কথাটি গুরুত্ব দেই নাই। মনে করেছি কথা কথা বলছে। এখন তো আমার সব শেষ।
আপনি আরো একটি বিয়ে করেছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমার দুটি ছেলে, আমি কোন বিয়ে করেনি। পারিবারিক কলহ আছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ২০১৩ সালে পারিবারিক ঝগড়া হলেও এরপর আর কোন দিন কোন ঝগড়া হয়নি। জান্নাতুল ফেরদৌস এর পিতা মোঃ আবু তাহের বলেন, আমার মেয়েকে ষড়যন্ত্র করে মেরে ফেলা হয়েছে।
আমি নিজে বাদী হয়ে এখন অভিযোগ নিয়ে যাচ্ছি। আমি আইনগত ব্যবস্থা নিবো। গুইমারা থানার ওসি মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, মৃত্যুর বিষয়ে অবগত হয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।