গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করে আসামিরা মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার পর তা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় প্রধান আসামি বাদলকে ঢাকা থেকে এবং দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
সোমবার দুপুর ২টায় র্যাব-১১’র অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকদের জানান, ৫ অক্টোবর রাত আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাং রোড এলাকা থেকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে মো. দেলোয়ার হোসেনকে (২৬) ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন ও ২ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে দেলোয়ারের দেয়া তথ্যানুযায়ী ৫ অক্টোবর ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকার কামরাঙ্গীচরের ফাঁড়ির গলি এলাকা থেকে ঘটনার প্রধান আসামি নূর হোসেন বাদলকে (২০) গ্রেফতার করা হয়।
ধর্ষণের দায় সরকার এড়াতে পারে না: ওবায়দুল কাদের
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আসামিরা ঘটনা ঘটানোর কয়েকদিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে নির্যাতিতার কাছে টাকা দাবি করে।
র্যাব জানায়, দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এছাড়াও দেলোয়ার বাহিনী বেগমগঞ্জে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও নানান রকম সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। এমনকি দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ২টি হত্যা মামলাও রয়েছে।
আসামিদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা জানতে চাইলে খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, অন্যায়কারীদের কোনো দল নেই। তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা তা জানার প্রয়োজনবোধ করছি না আমরা। তারপরও তাদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারলে আমরা জানাব।
আসামিদেরকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ঘটনার ৩৩ দিন পর ৯ জনকে আসামি করে ২টি মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার নূর ইসলাম মিয়ার বাড়িতে গৃহবধূর বসতঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রাখে স্থানীয় বাদল ও তার সহযোগীরা। এরপর গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা। এ সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে তারা মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করে।
এর আগে ৪ অক্টোবর বেগমগঞ্জ উপজেলা থেকে এ মামলার আসামি আব্দুর রহিম (২০) ও রহমত উল্লাহকে (৩১) গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত ২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৩২ দিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রোববার (৪ অক্টোবর) বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।