অসম চুক্তি বাতিলের দাবীতে লং মার্চ করেছিল বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টারঃ
পার্বত্য শান্তি চুক্তির নামে অসম চুক্তি বাতিলের দাবিতে পার্বত্য চট্রগ্রামের খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ১৯৯৮ সালের ৯ জুন লং মার্চ করেছিল বিএনপি। আলোচিত সে লংমার্চটি তখন ব্যাপক সারা ফেলেছিলো বাংলাদেশে। অসম চুক্তি বাতিল হবে আশায় বুক বেধেছিল পাহাড়বাসী।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সেই লংমার্চটি নারায়ণগঞ্জে এসে সে সময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়।
বিএনপির একটি সূত্রমতে, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাতিলের দাবীতে বিএনপি ১৯৯৮ সালের ৯ জুন চট্রগ্রামমুখী লং মার্চ করে। লং মার্চ ঠেকাতে আগের দিন ৮ জুন রাত ৮টার পর থেকেই ঢাকা-চট্্রগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকায় অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। তারা রাস্তার পাশের গাছ কেটে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন পরিবহনের চাকার পাম্প ছেড়ে দিয়ে সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
চট্রগ্রাম, কক্সসবাজার, সিলেট, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ পূর্বাঞ্চলের প্রায় ৩৮টি রুটের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে হয়ে যায়। ওইরাতে রাস্তায় আটকে পড়া যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ আর ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
৯ জুন সকাল ৯টার দিকে ঢাকা থেকে আসা বিএনপির গাড়ি বহর মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় থেমে যায়।
বাধার কারণে সাইনবোর্ডে মহানগর ফিলিং স্টেশন নামে একটি পেট্রোল পাম্পে অবস্থান নেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের সিনিয়র নেতা-কর্মীরা। খবরটি সেসময়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও ফলাও করে প্রচার হয়। বিকালের পর আওয়ামী লীগ পিছু হটে। এক পর্যায়ে রাত ৭টার পর পুলিশ গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেললে যান চলাচল শুরু হয়।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় ওই সময় মামলা করতে সাহস পায়নি বিএনপি। ঘটনার ৩ বছর পর ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর আলাউদ্দিন আল আজাদ নামে এক বিএনপি নেতা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৭৯ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামী করা হয় সাবেক এমপি শামীম ওসমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নাজিমউদ্দিন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান ভূইয়া ও খালেদ হায়দার খান কাজল (সবাই সাবেক)।
২০০৯ সালের ২৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগি সংগঠনের দশ নেতা আদালতে আত্মসমর্পন বরে জামিন প্রার্থনা করলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদালতের বিচারক মো. জালালউদ্দিন প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা বন্ড প্রদান সাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন। পরে মামলাটি বাতিল করা হয়।