চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান জ্ঞানতাপস মকবুলার রহমান (৯৫) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।(২১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও চার মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় মুন্সীগঞ্জ ঈদগাহ মাঠে জানাযা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যদায় তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তার মৃত্যুতে গোটা চুয়াডাঙ্গা জেলায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
মকবুলার রহমান অসংখ্যগুণের অধিকারি ছিলেন। তার চলাফেরা ও কথাবার্তায় ছিলো আলাদা ঢং । তিনি ছিলেন জেলার একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি যখন কোন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতেন দর্শক-শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতেন।
এই বয়সেও তাঁর স্মৃতিশক্তি টনটনে, দৃষ্টিশক্তি প্রখর, শ্রবণশক্তি যথার্থ; অনেকগুলো দাঁতও অক্ষত আছে মুখ-গহ্বরে। এখনো একাকী চলাফেরা করতে পারেন. সকালের দিকে বাড়ির বাইরে বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে যে কারো সঙ্গে আলাপ জুড়ে দেন। পত্রিকা এলে চোখ বুলিয়ে নেন। কথা বলেন শান্তি নিকেতনি ভাষায়, প্রমিত বাংলায়।
প্রসঙ্গত, মকবুলার রহমান ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও শান্তিনিকেতন থেকে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে তিনি ১৯৫০ সালে মুন্সীগঞ্জ একাডেমীতে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তৎকালীন চুয়াডাঙ্গা মহাকুমার ইউনিয়ন কাউন্সিলগুলোর মুখপত্র ‘পাক্ষিক গ্রাম’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। ১৯৬৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তাকে সভাপতি করে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের যাত্রা শুরু হয়।
১৯৭৩ সাল পর্যন্ত টানা ৭ বছর তিনি প্রেসক্লাবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে আটক হয়ে নির্যাতিত হন তিনি। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ফায়ারিং স্কোয়াডে তার মৃত্যু নির্ধারিত হয়েছিলো।