জাদুকাটার তীর কেটে লুটে নেয়া ১৮ ট্রলার বোঝাই খনিজ বালু নিলামে বিক্রয়
নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাস্কফোর্সের অভিযানে সুনামগঞ্জে সীমান্ত নদী জাদুকাটার তীর কেটে খনিজ বালু লুটে নেয়ার পর ১৮ ট্রলার বোঝাই (নৌযান) বালু নিলামে বিক্রয় করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে বিগত মার্চে একটি চক্র টাস্কফোর্সের অভিযানে জব্দকৃত বালু পাথর নিলামে ক্রয়ের মাধ্যমে ক্ষমতাপত্র পেয়ে জাদুকাটা নদীর তীর কেটে ফের খনিজ বালু পাথর লুটে প্রতিনিয়ত ভুয়া চালানপত্রে স্বাক্ষর বিক্রির মাধ্যমে পরিবেশ ধ্বংস করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
এমন অভিযোগের পরই শুক্রবার দুপুরের পর পরই রাত অবধি জেলার তাহিরপুরের জাদুকাটা নদীর তীরবর্তী ঘাগড়া কুড়িয়ায় ১৮ নৌযান বোঝাই খনিজ বালু জব্দ করে নিলামে বিক্রয় ও নৌযান থেকে জরিমানা আদায় করেন মোবাইল কোর্ট।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি তাহিরপুর উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবিরের নেতৃত্বে রাতেই উপজেলার জাদুকাটার নদীর তীরবর্তী ঘাগড়ায় এসব নৌযানে থাকা ৪৫ হাজার ঘনফুট বালু ১৯ টাকা ৫০ পয়সা মুল্যে সর্ব্বোচ্য দরদাতার নিকট আয়কর,ভ্যাট সহ ১০ লাখ ৮ হাজার ৬২৫ টাকায় বিক্রয় করা হয়।
একই সময় অবৈধভাবে লুটে নেয়া বালু পরিবহনের দয়ে ১৭ ট্রলার (নৌযান) মালিকদের নিকট হতে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা অর্থদন্ড জরিমানা আদায় করেন মোবাইল কোর্ট।
টাস্কফোর্সর অভিযানে ও মোবাইল কোট পরিচালনা কালে সহকারি কমিশনার মো. রেজাউল করিম, থানার ওসি মো. আবদুল লতিফ তরফদার, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিজিবি র্যাব প্রতিনিধি, পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, টাস্কফোর্সের অভিযানে গত ২৮ মার্চ জাদুকাটার তীরে জব্দকৃত ৫০ হাজার ঘনফুট খনিজ নুরি পাথর ও ৪০ হাজার ঘনফুট বালু নিলামে ক্রয় করেন উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের বিএনপি নেতা আবু সাইদ ও পৈলনপুর গ্রামের জাকির হোসেন।
এরপর উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতার ভাই মোশাহিদ তালুকদার পর্দার আড়ালে থেকে অর্থ বিনিয়োগ করে নিলাম বাগিয়ে নেন। তৎকালীন সময়ে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ’র সাথে নিলাম প্রাপ্তরা গোপন আতাত ও কৌশলে যোগসাজস তৈরী করে ক্ষমতাপত্রে নদীর তীরের সীমানা উল্ল্রেখ পূর্বক ক্ষমতাপত্র বাগিয়ে নেন।
এরপর বিভিণœ বালু পাথর ব্যবসায়ী শ্রমিকদের দিয়ে ফের নদী তীর কেটে খনিজ বালু পাথর লুটে নিতে মোশাহিদের শেল্টারে আবু সাইদ,জাকির নিলামের নামে নেয়া ক্ষমতাপত্রের ফটোকপির সাথে চালানপত্রে কারো কারো নিকট নিজেদের স্বাক্ষর বিক্রি করেছেন সর্ব্বোচ্য ৫০ হাজার থেকে সর্বনি¤œ ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে।
অপরদিকে এ চক্রের নিলামের ক্রয়কৃত পাথর বালু সরিয়ে নেবার সময় সীমা ৩১ মে পর্যন্ত দেয়া হলেও বছর জুড়ে নদীর তীর কেটে খনিজ বালু পাথর লুটে নিয়ে স্বাক্ষর বিক্রির টার্গেট নিয়ে ফের ইউএনও পদ্মাসন সিংহকে ম্যানেজ করে ক্ষমতাপত্রের সময় সীমা বাড়িয়ে নেন।
শনিবার এ অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে মোশাহিদ, জাকির, আবু সাইদের মুঠোফোনে কল করা হলে তারা এ বিষয়ে কেউই কথা বলতে রাজি না হলেও দ্বিতীয় দফায় কল করা হলে নিলাম গ্রহিতা আবু সাইদ বলেন, আমি পাথর নিলামে কিনেছিলাম। তিনি আরো বলেন, বালুর ব্যাপারে কিছুই জানিনা, যা হয়েছে তা জাকির এবং মোশাহিদের নির্দেশনায় হয়েছে, জাকির এসবের জবাব দেবে।
শনিবার তাহিরপুরের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ’র নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন গণমাধ্যমকে বলেন, আবু সাইদ ও জাকিরের ক্ষমতাপত্রে নিলামে কেনা বালু পাথর সরিয়ে নেয়ার সময় সীমা আর বাড়ানো হয়নি।।
।