করোনা মোকাবিলা, পরিস্থিতি সামলাতে করণীয় ও শক্তিশালী অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে বুধবার ঢাকায় পৌঁছেছেন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই বিগান।
ভারতে তিনদিনের এক বিশেষ সফর শেষে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছিয়েছেন তিনি। এসময় মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রসচিব।
জানা গেছে এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারও উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার শহরের একটি হোটেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলমের সাথে বিগানের বৈঠক করার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া তিনি বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সাথে বৈঠকের পরে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তিনি সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা যায়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। এই আলোচনার সময়, বিগান বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্বের বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করবেন বলে ধারণা করা হয়।
তার এই সফরে করোনা মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সহায়তার সাথে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) সম্পর্কিত দুই দেশের অভিন্ন লক্ষ্য নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের অফিস।
উল্লেখ্য, এর আগে সোমবার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে দেখা করেছেন বিগান।
বাংলাদেশের অগ্রাধিকার
উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই বিগানের ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপন করবে এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য আরও শক্তিশালী বৈশ্বিক সমর্থন চাইবে বলে জানা গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানান, ‘এটি একটি বৈশ্বিক দায়িত্ব। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে, এব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চাইবো আমরা।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের একার দায়িত্ব নয়, এটি একটি বৈশ্বিক দায়িত্ব এবং বাংলাদেশ এই বিষয়টি উত্থাপন করবে।’
আরো পড়ুন- রোহিঙ্গাদের কারণে দেশে সামাজিক-পরিবেশগত ক্ষতি হচ্ছে: শেখ হাসিনা
২৩ নভেম্বর ২০১৭ সালে প্রত্যাবাসন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের ‘আস্থার অভাব’ থাকায় ২০১৮ সালের নভেম্বরে এবং ২০১৯ সালের আগস্টে দু’বার প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
আইপিএস এবং বাংলাদেশ
ড. মোমেন জানান, তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) নিয়ে কথা বলবেন এবং বাংলাদেশের এ বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই।
তিনি আরো জানান, আলোচনার সময় অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ভিসা সংক্রান্ত ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ চাইতে পারে বাংলাদেশ।
‘যুক্তরাষ্ট্রের আইপিএস’র বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, তবে আইপিএস কার্যকর করতে এখানে অবকাঠামো উন্নয়নে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের এগিয়ে আসতে হবে।’ ড. মোমেন বলেন।
জানা গেছে যে, আসছে ১৬ অক্টোবর ঢাকা ত্যাগ করবেন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই বিগান।